চাঁদপুর সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু

কবির হোসেন মিজি :

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে মৃত বাচ্চার সিজারিয়ান করাতে গিয়ে বৃষ্টি বেগম (২৬) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত বৃষ্টি বেগম হাজিগঞ্জ উপজেলার রাধাসার গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির শুক্কুর আলমের স্ত্রী ও চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া গ্রামের সিরাজ খানের মেয়ে। তার ১৮ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত বৃষ্টির স্বামী ও শাশুড়ি শামসুন্নাহার বেগম জানান, গত শুক্রবার রাত ১২টায় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা বৃষ্টিকে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তারা জানান, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে ডাক্তার তাদেরকে জানিয়েছেন যে বৃষ্টি বেগমের গর্ভের সন্তান মৃত। এ কদিন গর্ভে মৃত সন্তান নিয়েই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নিহত বৃষ্টি। আর গর্ভের ওই মৃত সন্তানকে ডেলিভারি করার জন্য মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের এ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ডা. আবু সায়েম,
জুনিয়র কনসালন্টে (গাইনী) ডা. তাবেন্দা আক্তার ও তার সহযোগী চিকিৎসক ডা. আঞ্জুমারা ফেন্সি তার সিজিরিয়ান করান বলে জানা গেছে।

বৃষ্টির বোনের ছেলে শাহিন হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকালে তার খালা বৃষ্টিকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাকে কয়েক ব্যাগ রক্ত দেওয়া লাগবে। তাই জরুরী ভিত্তিতে রক্তের ব্যবস্থা করার জন্য। তাদের কথা মতো তারা বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে রক্তের ব্যবস্থা করে হাসপাতালে ফিরে এসে শুনতে পায় তার খালা মারা গেছেন। সে অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণেই তার খালার এমন অনাকাঙ্খিত মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে এমন প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই মোঃ নাসির উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার সম্পর্কে জানেন। তিনি বলেন, হাসপাতালের প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি তারা যদি লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ দেয় তাহলে লাশের সুরতহাল করে লাশ থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের এ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ডা. আবু সাদত আবু সায়েম ও জুনিয়র কনসালন্টে (গাইনী) তাবেন্দা আক্তার জানান, অপারেশন করার আগে তার শারীরিক সব ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে । আমরা তার অপেরেশন করার আগেই ওই রোগী ব্যথায় পূর্বের সিজারের স্থান ফেটে গিয়ে (জরায়ু) প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা রোগীর স্বজনদের রক্তের ব্যবস্থা করতে বলেছি। কিন্তু তারা রক্ত ব্যবস্থা করার আগেই রক্তশূন্যতার কারণে রোগীটির মৃত্যু হয়েছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন