চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ২ দিনে ১৪জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ দিনে (শনি ও রোববার) ১৪জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। ৪জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট অপেক্ষায়। বাকী ২জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে তারা সবাই করোনার জটিল উপসর্গে ভুগছিলেন।

শনিবার সকাল থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধুমাত্র চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে শনিবার মারা গেছেন ৯জন এবং রোববার মারা গেছেন ৫জন। সদর হাসপাতালের করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার রামদাসদী এলাকার রতন বেপারী (৭৫) রোববার (২৫ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান। তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট অপেক্ষমান।

চাঁদপুর শহরের গুনরাজদী এলাকার তাজুল ইসলাম (৩৬) গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার এলাকার সফিকুল ইসলামকে (৬০) রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে ১০ মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।

শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া এলাকার আয়েশা বেগম (৬৫) গত ১৫ জুলাই চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। রোববার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী এলাকার ফাতেমা বেগম (৮৫) শনিবার সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। রোববার সকাল ৮টার দিকে তিনি মারা যান।

মতলব উত্তর শ্যামনগর গ্রামের শিরিন (৫০) শনিবার দুপুর আড়াইটায় সন্ধ্যা চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইলোশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

ওই উপজেলার নয়াকান্দি এলাকার জাহানারা (৬০) গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার (২৪ জুলাই) রাত ৯টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

একই উপজেলার ঘিলাতলী এলাকার তাহেরা বেগম (৭০) শনিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। রাত ৯টার দিকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের ফজলুল হক (৭০) গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইলোশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

শাহরাস্তি উপজেলার কালিয়াপাড়া এলাকার শোয়াপাড়া এলাকার সাজেদা বেগম (৭০) গত ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৫টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনিও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া এলাকার সাজেদা বেগম (৫৫) শনিবার (শুক্রবার দিবাগত) রাত ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার নমুনা টেস্টের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ।

একই উপজেলার পূর্ব এখলাশপুর এলাকার সিরাজুল (৫৫) শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তখনি তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ।

চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী এলাকার মায়মুনা (৬৫) শনিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। ২ ঘন্টার মাথায় বিকেলে ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। তিনি করোনার উপসর্গে ভুগছিলেন। তার নমুনা টেস্টের রিপোর্ট অপেক্ষমান।

একই উপজেলার বহরিয়া এলাকার রামদাসদী গ্রামের মেহেদী হাসান (৩৬) গত ২২ জুলাই সকাল সোয়া ৮টার দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান। তিনিও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)