চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে : দুই সপ্তাহে ১২ রোগী ভর্তি

কবির হোসেন মিজি :
আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেশ ক’জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে বর্তমানে ক’জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার পুরুষ ওয়ার্ডে ও চতুর্থতলার মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনেও ইউসুফ নামে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত একজন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

জানা যায়, চাঁদপুর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এই চলতি মাসের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পুরুষ ওয়ার্ড এবং মহিলা ওয়ার্ডে সর্বমোট ১২জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ওয়ার্ডে ১০জন এবং মহিলা ওয়ার্ডে ২জন রোগী চিকিৎসাসেবা নেন। এদের অনেকেই চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

গত বুধবার দুপুরেও পুরুষ ওয়ার্ডে ১জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪ জন রোগী এবং মহিলা ওয়ার্ডে ১ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিলা ওয়ার্ডের নার্সদের ইনচার্জ নুরুন্নাহার জানান, গত মাসেও মহিলা ওয়ার্ডে ২/৩জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।

রোগীর স্বজনরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড জ্বরে ভুগছিলেন তাদের জ্বর না কমায় তাদের চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বলে জানতে পারেন।

হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সরা জানায়, ভর্তিকৃত রোগীরা গত কয়েকদিন পূর্বে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তাদের রক্ত পরীক্ষা করলে তারা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের বিষয়টি শনাক্ত হয়।

বর্তমানে তাদেরকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার পুরুষ ওয়ার্ডে এবং মহিলা ওয়ার্ডে মশারি টানিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে দেখা গেছে।

এদিকে হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, ডেঙ্গু মশার কামড়েই কিন্তু তারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে চাঁদপুরে মশার উপদ্রব বেশি। নিয়মিত মশা নিধনের ওষুধ না দেওয়া হলে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব বাড়তে পারে বলে তারা মনে করছেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিবুল আহসান চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্ষা মৌসুমে সাধারণ মশা ও এডিস মশার প্রজনন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যার ফলে ডেঙ্গু জ্বর ও চিকুনগুনিয়া রোগ ছড়ায়। তিনি বলেন,ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে এবং এই ভাইরাসবাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে হয়ে থাকে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয়দিনের(৩-১৩ ক্ষেত্রে) মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

শেয়ার করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)