প্রবাসী শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ

-রোটারিয়ান জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়

‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা ও বন্ধু
মানুষ মানুষকে পণ্য করে
মানুষ মানুষকে জীবিকা করে
পুরানো ইতিহাস ফিরে এলে
লজ্জাকি তুমি পাবেনা ও বন্ধু
বল কি তোমার ক্ষতি
জীবনের অথই নদী
পার হয় তোমাকে ধরে দুর্বল মানুষ যদি
মানুষ যদি না হয় মানুষ, দানব কখনো হয়না মানুষ
যদি দানব কখনো বা হয় মানুষ
লজ্জাকি তুমি পাবেনা ও বন্ধু!
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা ও বন্ধু!’

কিছু মানুষ আছে সততার সাথে অক্লান্ত পরিশ্রম আর আন্তরিকতার সাথে কাজ করার কারনে অন্যের কাছে আস্থা বিশ্বাস এর জায়গা তৈরি করে নেন। প্রিয় পাঠক আজ আমি আপনাদের সামনে তেমনি একজন প্রবাস বান্ধব মানুষকে তুলে ধরছি তিনি হলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।

তার তুলনা তিনি নিজেই অন্য কেউ নই, ২০০৮ সাল থেকেই প্রবাসে আছি এর আগে পরে অনেক রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবে এসেছেন তারাও যার যার অবস্থান থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক ও দেশের কল্যাণে কাজ করেছেন।

তবে ২০১৫ সালে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুখ দুঃখ দেখার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসাবে এমন একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন যিনি আসলেই প্রবাস বান্ধব মানুষ।

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এর বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়, ব্যাক্তি জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের বাবা, স্ত্রী সৈয়দা গুলে আরজু তিনিও দেশ-দশের কল্যাণে প্রবাসের মাটিতে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য কাজ করেছেন।

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ ২০১৫ – ২০ সাল যাবত সৌদি আরবের মাটিতে প্রবাসী বাংলাদেশি অসহায় হতদরিদ্র শ্রমিকদের পাশে থেকেছেন, প্রবাসের মাটিতে স্থায়ী মিশন ভবন স্থাপন, দেশের ভাবমূর্তি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে অসহায় কর্মহীন শ্রমিকদের কাজ দেয়া, সমস্যা সমাধান করার জন্য নিবেদিত ভাবে কাজ করেছেন।

স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের নিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক বাড়াতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মহামান্য বাদসা সালমান বিন আবদুল আজিজ এর সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাবসা, বাণিজ্য, শ্রমিকদের সুযোগ, সুবিধা বৃদ্ধিকল্পে দুই দেশের মধ্যে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শান্তিপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইসলামি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে, বাংলাদেশের শ্রমবাজার বাড়াতে দক্ষিন সুদান সফর করা হয়েছে যা অন্য সময় হয়নি।

দিনে বা রাতে যে কোনো সময় সাধারণ একজন শ্রমিক যে কোন প্রয়োজনে কল দিলে তিনি অনায়াসে কল রিসিভ করে তাদের কথা শুনেন এবং সব ধরনের সমস্যা সমাধান করার চেস্টা করেন।

আবার অনেকেই কল দিলে সাথে সাথে কল রিসিভ করতে না পারলেও পরে হলেও তিনি নিজেই কল বেক করে যিনি কল দিয়েছেন তার সমস্যা বা প্রয়োজনের কথা শুনে সহযোগিতা করেন।

একজন রাষ্ট্রদূত হওয়া সত্ত্বেও তিনি অনায়াসে সবাইকে আপন করে নিতে পারেন এটি গোলাম মসীহ বলেই সম্ভব হয়েছে।

প্রবাসের মাটিতে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে যেকল সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলি কাজ করছেন তাদের সব ধরনের সহযোগিতা বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে করেছেন – যেমন ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সৌদি আরবের একমাত্র নাট্য সংগঠন রিয়াদ বাংলাদেশ থিয়েটার, সামাজিক সংগঠন শ্যাডো, ২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করে নজরুল একাডেমি, কলতান।

প্রবাসের মাটিতে কোন শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা অভিভাবক রাষ্ট্রদূতের কাছে যে কোন ধরনের সহযোগিতা চাইলে কাউকেই তিনি খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি, উদার মনে হাসিমুখে সহযোগিতা করেছেন।

রিয়াদ শহরের বাহিরে প্রবাসীদের দারে পাসপোর্ট রিইসু ও রি-নিউ সেবা পৌঁছে দিতে সৌদি আরবের ১৩টি প্রদেশে প্রবাসী সেবা কেন্দ্র A2i-EDC অফিস চালু করেছেন। দূতাবাসের সহযোগিতায় সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সপ্তাহের প্রতিদিন প্রবাসীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। আল মামল কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় তা বাস্তবায়ন করছেন।

প্রবাসী সেবা কেন্দ্রের ফলে প্রবাসীদের আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে, সময় নস্ট হয় না। এতে খুশি প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

অপরদিকে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে প্রবাসের মাটিতে দেশীয় বাংলাদেশি সাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন কাজে পরামর্শ প্রদান করতেন তিনি।

সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সংবাদকর্মী সহ সকলের কাছেই তিনি প্রিয় প্রবাস বান্ধব গোলাম মসীহ ভাই হিসাবে পরিচিত।

তিনি চলে যাবেন শুনে সকল প্রবাসীদের মাঝে মেঘের ছায়া নেমে এসেছে।

-লেখক পরিচিতি : প্রবাসী সাংবাদিক, নাট্যকার, লেখক, কবি, সৌদি আরব।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)