ফরিদগঞ্জের কড়ৈতলী আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ স্থানীয় এমপির

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী খাজা আহমেদীয়া আলিম মাদ্রাসায় বিভিন্ন পদে নিজের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিয়ে বিপুল অর্থ বাণিজ্যের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এসব পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি তুলেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আপাতত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কড়ৈতলী খাজা আহমেদীয়া আলিম মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপালসহ বিভিন্ন পদে একাধিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এসব পদে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম তার অনুসারী ও পছন্দের লোকদের নিয়োগ নেওয়ার প্রক্রিয়া করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, মাওলানা রফিক জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তাই জামায়াত ঘরানার লোকদের নিয়োগ দিয়ে দলীয় আদর্শ বাস্তবায়ন এবং তিনি নিজে আর্থিক সুবিধা নিতে চাইছেন। বিশেষ করে ভাইস প্রিন্সিপাল পদে জামায়াত সমর্থক এক শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে জোরালো অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা আরো জানান, ২৬ জুলাই আয়া ও নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অন্য পদে এখনো দরখাস্ত গ্রহণ চলছে। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন করোনাকালে তড়িঘড়ি করে এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

শুধু তাই নয়, কম্পিউটার অপারেটর ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে ইতিপূর্বে লোক নিয়োগ করা হয়েছে (এমপিওভুক্তি স্থগিত হওয়ায় তারা এমপিওভুক্ত হননি) এবং তারা এখনো মাদ্রাসার নিজস্ব বেতনে কর্মরত আছেন। এই দু’টি পদেও নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় ভুক্তভোগীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানকে অবহিত করলে তিনি এসব নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। ইউএনও বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম শনিবার বিকেলে মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, রোববার (২৬ জুলাই) আয়া ও নৈশ প্রহরী পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে এমপি মহোদয়ের নির্দেশের কারণে এই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ভাইস প্রিন্সিপালসহ অন্যান্য পদে নিয়োগের দরখাস্ত গ্রহণ এখনো চলমান আছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত দলীয়করণ, পছন্দের লোককে নিয়োগ দেওয়া ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। অনিয়নের যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, স্থানীয় এমপি মহোদয় রোববারের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অধ্যক্ষ এখনো নিয়োগ স্থগিতের বিষয়ে আমাকে কিছু জানাননি।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন