ফরিদগঞ্জে মডেল মসজিদের জমি অধিগ্রহণে ৬ কোটি টাকার বাণিজ্য!

নিজম্ব প্রতিনিধি :
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের ভূমি অধিগ্রহণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভূমি অধিগ্রহণকালীন দায়িত্বে থাকা সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী আফরোজ, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মমতা আফরিন ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। ভূমির মালিকানা পূর্বেই উপজেলা পরিষদ অথচ মালিকানা দাবিদাররা প্রায় অর্ধেক মূল্য গ্রহণ করে পুরো টাকায় স্বাক্ষর করে দিয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

অধিগ্রহণকৃত ভূমির মূল্য ৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়, তাতে মালিক দাবিকৃতরা প্রায় ৩ কোটি টাকা পেয়েছে। বাকী টাকা অধিগ্রহণকারীরা ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিগত প্রায় ছয় দশকেও সম্পত্তির খোঁজ-খবর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা না রাখায় এই সম্পত্তির বেশির ভাগ অংশই এখন বেদখল। ফলে ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে সরকারের সম্পত্তি সরকারের নিকটই বিক্রি করছে দখলদাররা।

জানা যায়, পাকিস্তান আমলে তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমার ফরিদগঞ্জ টিটিএন্ড ডিসি এর নামে ১০ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হয়। সেই অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের এলএ কেস নং- ১৯২/৬৩-৬৪ সালে কাছিয়াড়া গ্রামের ২৯১নং মৌজায় ৪৫জন ব্যক্তির নিকট থেকে ওই সময়ের ৩৪ হাজার টাকা মূল্যে সম্পত্তি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।

এছাড়া ১৯৫৭ সালে সাবকবলা দলিল মুলে তৎকালিন সিও ডেভেলপমেন্টের নামে আরো ৬৭ শতাংশ ভ‚মি ক্রয় করা হয়। কিন্ত উপজেলা পরিষদ তাদের অধিগ্রহণকৃত ১০ একর সম্পত্তির মধ্যে ৫ একর সম্পত্তি খাজনা নিয়মিত দিয়ে আসলেও বতর্মানে মাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে ৪ একর ৬৭ শতক।

সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম মজুমদার উপজেলা পরিষদের সম্পত্তির হদিস নেই বলে আলোচনায় আনার প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জি এস তছলিমকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদের স্থাবর সম্পত্তি যাচাই বাছাই ও রক্ষা উপ-কমিটি গঠন করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা মডেল মসজিদের নামে যেই সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাও উপজেলা পরিষদের অধিগ্রহণকৃত পূর্বেরই সম্পত্তি। মসজিদের মতো পবিত্র একটি কাজেও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ সত্যি অবাক করার মতো। সরকার যেখানে মানুষের ভূমির বুঝ দিয়ে থাকে সেখানে সরকারের নিজেরই সম্পত্তির খোঁজ নেই। বিষয়টি জরুরী ভিক্তিতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিলে প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে বলে স্থানীয়দের আশা।

সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী আফরোজ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মমতা অফরিনসহ দুই কর্মকতার মোবাইল নান্বার না থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি। নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে দুই কর্মকর্তার মোবাইল নান্বার চাইলে কেউ দিতে রাজি হয়নি।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রকৌশী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোন আপোষ নেই। দোষীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)