ফরিদগঞ্জে যুবদলের সম্মেলন পন্ড : সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণে আহত ৩০

শরীফুল ইসলাম :
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের সম্মেলনে বক্তব্যের জন্য নাম ঘোষণা না দেওয়াকে কেন্দ্র করে পৌর যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ইমাম হোসেন ও নাজিম ভুঁইয়ার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে।

শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শোল্লা আশেক আলী স্কুল এন্ড কলেজের সম্মেলন কক্ষে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে আহত কারো নাম জানা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক বছর পর উপজেলা ও পৌর যুবদলের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সে আলোকে শনিবার সম্মেলন শুরু হয়। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে সম্মেলনের শুরুতে জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান আকাশ ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল গাজী বাহারসহ জেলার অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে সংঘর্ষ শুরু হয়।

যুবদলের একাধিক নেতা জানান, দীর্ঘ বছর পর ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এ সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ হান্নান। তবে উপজেলা ও পৌর যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কতজন প্রার্থী হয়েছেন তা জানা যায়নি। পৌর যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ইমাম ও নাজিমের অনুসারিরা ককটেল বিস্ফোরণ ও চেয়ার ছোড়াছড়ি শুরু করেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মহসিন মোল্লা জানান, সম্মেলনের সব কিছুই ঠিক ছিল। সঠিক সময়ে শুরু হয় সম্মেলন। আমি সম্মেলনের সভাপতি ছিলাম। সঞ্চালক ছিলেন পৌর যুবদলের আহবায়ক ইমাম হোসেন। তিনি বক্তব্যের জন্য নাম ঘোষণা করছিলেন। ওই সময় বক্তব্যের জন্য কেন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও বর্তমানে সভাপতি প্রার্থী নাজিম ভুঁইয়ার নাম ঘোষণা করা হয়নি এই নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।

তিনি আরো জানান, সংঘর্ষে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যার কারণে বাধ্য হয়ে সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করি। সংঘর্ষে ৭-৮জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বাকীরা আহত হলেও প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মীরা আসার কারণে আহতদের নাম জানা যায়নি।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মান্নান জানান, যুবদলের সম্মেলন করা হবে আমাদের কাছ থেকে কোন ধরণের অনুমতি নেয়া হয়নি। আমরা সম্মেলন সম্পর্কে জানতাম না। তবে সংঘর্ষের খবর জানতে পেরেছি।

এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এই সম্মেলন না করার জন্য উপজেলা ও পৌর যুবদলের অনেক নেতা-কর্মী দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ফরিদগঞ্জের এক প্রভাবশালী এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশী সম্মেলনের বিষয়ে অনঢ় ছিলেন। ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে যেতে সম্মেলন আয়োজনে বাধ্য হয় জেলা যুবদল নেতবৃন্দ। উপজেলা সদরে না করে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই সম্মেলন আয়োজন নিয়েও রয়েছে নানা সমালোচনা। তাছাড়া পৌর যুবদলের সম্মেলন পৌর এলাকার বাইরে করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে।

উল্লেখ্য, ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের এই সম্মেলনের আশঙ্কা রয়েছে মর্মে গতকাল শনিবার দৈনিক চাঁদপুর প্রবাহের প্রথম পাতায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সম্মেলনটি পন্ড হলো।

শেয়ার করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)