বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় চাঁদপুরে দশ বেডের আইসিইউ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলার মানুষের এখন থেকে আর কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট পেতে চব্বিশ ঘণ্টাও অপেক্ষা করতে হবে না। দিনের রেজাল্ট দিনেই পেয়ে যাবেন। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই নমুনা প্রদানকারীরা নিশ্চিত হয়ে যাবে তারা করোনায় আক্রান্ত কি না।

আর সেটি সম্ভব হলো চাঁদপুরে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষাগার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সোমবার এটি উদ্বোধন করেন। চাঁদপুর শহরের নতুনবাজারস্থ কদমতলা এলাকায় পৌর মার্কেটে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাটে এ পরীক্ষাগারটি স্থাপন করা হয়।

চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে এ ল্যাবটি স্থাপিত হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে ফিতা কেটে এটির উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে ডা. দীপু মনি চাঁদপুরে এই করোনা টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি তার বড় ভাই ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. গৌতম বুদ্ধ দাশের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। একইভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যে এতে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে কথাও শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন।

এছাড়া আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন এবং এখানে হাই ফ্লো নেজেল ক্যানুলা সংযোজনের বিষয়টিও শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন। চাঁদপুরের স্বাস্থ্য খাতে নতুন যে বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে তার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণা করার প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীর বড়ভাই ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু তার বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে জানান, বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় চাঁদপুরে দশ বেডের আইসিইউ হতে যাচ্ছে। এর জন্যে জায়গাও দেখা হয়ে গেছে।

এছাড়া বিশ্ব ব্যাংক আরো কিছু অর্থ দিবে চাঁদপুরের স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের জন্যে। শুধু তাই নয়, চাঁদপুরের আড়াইশ’ বেডের হসপিটালের জন্যে দশতলা একটি ভবন হচ্ছে। এটি হাসপাতালের কাছাকাছি করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত।

যেহেতু বর্তমানে হাসপাতাল এরিয়ায় কোনো জায়গা নেই, সেজন্যে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পেছনে যে খাস জমিটি রয়েছে, সেটিই ভালো হবে বলে আমরা মনে করছি।

ডা. টিপু চাঁদপুরে আড়াইশ’ বেডের হসপিটালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট এবং আরটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনে শিক্ষামন্ত্রীর বন্ড মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় সে টাকা (২০ লাখ টাকা) এখানে ব্যয় করার তথ্য তুলে ধরেন।

একই সাথে তার নিজের অর্থ ব্যয়ের কথাও তিনি তুলে ধরেন। ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু এই করোনা টেস্টিং ল্যাবটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ল্যাবরেটরিতে রূপান্তরিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. গৌতম বুদ্ধ দাশ, চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিব উল করিম, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিন, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুছ, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) কাজী আব্দুর রহিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা বদরুনানাহার চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আলম মিল্টন প্রমুখ। উদ্বোধনী পর্ব শেষে শিক্ষামন্ত্রী অন্য অতিথিদের নিয়ে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাব উদ্বোধন করেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)