মতলব আইসিডিডিআরবিতে ১১ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৮৬৯ রোগী ভর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষাশেষে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ কওে চাঁদপুর ও আশপাশের জেলাগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেক বেড়েছে। গত ১১ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮৬৯জন রোগী মতলবস্থ আইসিডিডিআরবি মতলব কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আইসিডিডিআরবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আইসিডিডিআরবি’র চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতি বছর এ সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ভ্যাপসা গরম এবং দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার খাওয়ায় লোকজন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সময় মতো সঠিক চিকিৎসা এবং সচেতন থাকার মাধ্যমে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

সূত্রে জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে ৮৬৯জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৭৯জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৪৫০ ও নারীর সংখ্যা ৪১৯জন। শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৯০। ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী ২৩জন। বাকী রোগীদের বয়স ১৫ বছরের বেশি।

সূত্র জানায়, চাঁদপুর সদরের ১১৩, ফরিদগঞ্জের ৬৮, হাইমচরের ১৮, হাজীগঞ্জের ৫৭, কচুয়ার ৫৪, মতলব উত্তরের ৩৮, মতলব দক্ষিণের ৪২, শাহরাস্তির ২৬, কুমিল্লার বরুড়ার ৪১, চান্দিনার ৫৭, কুমিল্লা সদরের ৩১, দাউদকান্দির ৩৫, দেবীদ্বারের ১৯, হোমনার ১৫, মুরাদনগরের ২৩, তিতাসের ৩১, ল²ীপুর সদরের ৪৩, রায়পুরের ৩০ ও রামগঞ্জের ৩৩জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছে। বাকি রোগীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার।

সরেজিমন দেখা যায়, রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। চিকিৎসক ও নার্সরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। রোগী ও রোগীদের অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। কুমিল্লার হোমনা উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের গৃহবধূ সীমা বেগম বলেন, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি করায় তার ছেলে মো. সাদ্দামকে (১ বছর ৫ মাস) আজ সকালে এ হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসকেরা ওষুধ ও খাবার স্যালাইন দিয়েছেন। তার অবস্থা ভালোর দিকে।

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুদের স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খেতে দেওয়া হচ্ছে। সাত মাস থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের খাওয়ার স্যালাইন, বেবি-জিংক, মায়ের বুকের দুধ, সুজি ও খিচুড়ি খাওয়ানো হচ্ছে। অন্যান্য রোগীকে খাবার স্যালাইন, স্বাভাবিক খাবার এবং ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে।

আইসিডিডিআরবি’র মতলব কেন্দ্রের প্রধান আল ফজল খান বলেন, পচা-বাসি খাবার খাওয়ায়, দূষিত পানি পান করায় এবং কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার এ সময়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কম। গত বছর এ সময় প্রতিদিন গড়ে শতাধিক ডায়রিয়া রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)