শরীফুল ইসলাম :
ইলিশের আমদানি শুরু হয়েছে চাঁদপুরে প্রধান মৎস্য আড়ত বড় স্টেশন মাছঘাটে। সাগর মোহনায় টানা ৬০ দিন ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় এবং চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় অনেকটা নীরব ছিল চাঁদপুর মাছঘাট। সাগরের নিষেধাজ্ঞা শেষ আর পদ্মা-মেঘনায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে। আর মাছঘাটে ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি বলে জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
বর্তমানে চাঁদপুর মাছঘাটে প্রতিদিন ৮০০ থেকে এক হাজার মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের আহোরিত ছোট সাইজের ইলিশও নিয়মিত মাছঘাটে বিক্রি হচ্ছে। গত ২-৩ দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি হওয়ার কারণে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছঘাট। চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে পাইকারি, আড়ৎদার, খুচরা বিক্রেতা ও শ্রমিকদের মধ্যে।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় ট্রলার এবং পিকআপ থেকে টুকরিতে করে নামানো হচ্ছে ইলিশ। আর এসব ইলিশ দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, দৌলতখাঁন, চরফ্যাশন, হাতিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মাছঘাটে আনা হয়েছে। এসব ইলিশ আড়তে নামাচ্ছেন শ্রমিকরা। বিক্রির জন্য আড়ৎগুলোর সামনে বড় বড় স্তুপ করে সাজানো হয়েছে এসব ইলিশ।
মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী বিপ্লব খান বলেন, সাগরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। বর্তমানে ৯০০ থেকে এক হাজার গ্রামের ইলিশের দাম এক হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা, এক কেজির উপরের ইলিশের দাম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, দেড় কেজির উপরের ইলিশের দাম ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি। আর একই মাছ যদি দক্ষিণাঞ্চলের হয়, তাহলে প্রতিকেজিতে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা কমে যাবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার বলেন, ঈদের পর থেকেই মাছের আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন ৮০০ থেকে এক হাজার মণ ইলিশ আসে। আস্তে আস্তে আমদানি আরো বাড়বে। তবে এখন যে ইলিশগুলো আসছে, এসব ইলিশের সাইজ খুবই ছোট। তবে সামনে ইলিশ পুরো মৌসুম, যার কারনে আমদানি আরো বাড়বে। গত দুই মাস চাঁদপুরে ইলিশ ছিল না। আমরা নিরাস হয়নি, আশা করি শীঘ্রই ভরপুর ইলিশ আমদানি হবে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, সারাদেশে চাঁদপুর জেলা ইলিশের শহর হিসেবেই পরিচিত। যার কারনে ইলিশের সবচেয় বড় ল্যান্ডিং সেন্টারে এখানে। চাঁদপুর মাছঘাটে পদ্মা-মেঘনা ছাড়াও অন্যজেলার ইলিশ চাঁদপুর ঘাটে চলে আসে। মূলত পরিবেশ যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়ার এখানে ইলিশের আমাদানি বেশি। আর কিছুদিন পর থেকে ইলিশের আমদানি ও রপ্তানী আরো বৃদ্ধি পাবে।