চাঁদপুরে করোনায় মৃতদের বেশির ভাগই বয়স্ক : যে কারণ ব্যাখ্যা করলেন চিকিৎসক

কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তরুণদের চেয়ে বেশিরভাগই বয়োবৃদ্ধরা মৃত্যুবরণ করছেন। করোনার প্রথম ধাপে চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা কম থাকলেও দ্বিতীয় ধাপে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ঈদুল আযহার পরবর্তীর সময়ে চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার অনেক বেশি।

খবর নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুবরণ করছেন তাদের বেশির ভাগই বয়স্ক ও বয়োবৃদ্ধ লোক। এর পাশাপাশি বর্তমানে চাঁদপুরে শহরের চেয়ে গ্রাম অঞ্চলের লোক বেশিরভাগ আক্রান্ত হচ্ছেন বলে চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিদিনই চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে দেখা গেছে বেশিরভাগই লোকই ৫০ বয়সের ঊর্ধ্বে।

চাঁদপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত চার দিনে চাঁদপুরে সর্বমোট ২৫ জন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের প্রত্যেকের বয়সই পঞ্চাশের ঊর্ধ্বে। এর মধ্যে শুক্রবার, শনিবার, রোববার, সোমবার করোনায় মারা গেছেন ৪জন, বাকী ২১জন উপসর্গে মারা গেছেন।

চার দিনে করোনায় মৃতরা হলেন : চাঁদপুর সদর বাবুরহাট এলাকার শাহানারা বেগম (৫৫), হাজীগঞ্জের নৌহাটা এলাকার আবুল বাশার (৭০), শাহরাস্তির রায়শ্রী এলাকার বিনয় ভূষণ (৭০), শাহরাস্তির শোরশাক এলাকার নূর ইসলাম (৭০)।

চার দিনে করোনায় উপসর্গে মৃতরা হলেন- শাহরাস্তির ফতেপুর এলাকার মোঃ আবুল হোসেন (৭৫), ফরিদগঞ্জের মনতলা এলাকার রেজিয়া বেগম (৫৫), হাজীগঞ্জের বড়কুল এলাকার শেফালী (৫২), মতলব উত্তরের ইন্দুরিয়া এলাকার তফুরা খাতুন (৬৫), চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার এলাকার তাজুল ইসলাম (৬০), ফরিদগঞ্জের কাচিয়ারা এলাকা আমির হোসেন (৬০), চাঁদপুর শহরের বিটি রোড এলাকার রেজিয়া বেগম (৫৫), কচুয়া উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার হালিমা খাতুন (৩৫), ফরিদগঞ্জের বাথিলুবা এলাকার শামসুন্নাহার (৬৫)।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর এলাকার আঃ মমিন সরদার (৬৫), হাইমচরের আলগী এলাকার আনোয়ারা বেগম (৫০), ফরিদগঞ্জের ধানুয়া এলাকার জামাল শেখ (৯৫), শরীয়তপুরের সখিপুর উপজেলার তারাবুনিয়া এলাকা মোঃ হোসেন (৬০), হাইমচরের ভিঙ্গুলিয়া এলাকার মমতাজ বেগম (৬০), মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর লুধুয়া এলাকার রেহেনা (৩৫), মতলব দক্ষিণ উপজেলার আড়ংবাজার সালেহা (৫২), চাঁদপুর সদরের ধানুয়া বাজার এলাকার ফুলবানু (৫০), একই উপজেলার মহামায়া এলাকার জাহানারা বেগম (৬৫), ফরিদগঞ্জের হর্নি দুর্গাপুর এলাকার মিজান (৪৫), চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বরের মোঃ নাছির উদ্দিন (৭৫), একই উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকার আঃ লতিফ (৬৫)।

দেখা গেছে হাতে গনা কয়েকজন ছাড়া এসব মৃত ব্যাক্তিদের বয়স বেশির ভাগই ৫০ বছরের উপরে।

এ বিষয়ে আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এমও) ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, প্রথমে বয়স্করা করোনা,য় বেশি আক্রান্ত হলেও বর্তমানে চাঁদপুরে বয়স্কদের পাশাপাশি তরুণ -যুবকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে তরুণ যুবকদের শারীরিক অবস্থা ভালো থাকার কারণে এবং ডায়াবেটিক শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের সমস্যা না থাকার কারণে তারা মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে বেঁচে গিয়ে চিকিৎসাসেবায় করোনা থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

তিনি জানান, গত কয়েকদিনে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে যে কয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের বেশিরভাগই বয়োবৃদ্ধ এবং বয়স্ক লোক। তাদের ডায়াবেটিক শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের সমস্যার কারণে শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণেই মৃত্যুবরণ করছেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন