রহিম বাদশা :
চাঁদপুর জেলায় নতুন করে আরো ৭জনের নমুনা টেস্টের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ এসেছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার (১ মে) রাতে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যাওয়া হাজীগঞ্জের রাজারগাঁওয়ের ফাতেমা বেগমও (৪০) রয়েছেন। নতুন আক্রান্ত অন্যদের মধ্যে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন অফিসের ৩জন কর্মচারীও রয়েছেন।
এ নিয়ে চাঁদপুর জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪জন। এই ৪জনের সবার’ই মারা যাওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ২জন সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির কয়েক ঘন্টা পর এবং ২জন বাড়িতে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে চাঁদপুরের আরো ২৭জনের নমুনা টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ৯জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ এসেছে। তবে এদের মধ্যে ২জন আগেই পজেটিভ ছিলেন। অর্থাৎ নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৭জন। তবে বিস্তারিত জানাবে সিভিল সার্জন অফিস।
তিনি জানান, গত শুক্রবার সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যাওয়া ফাতেমা বেগমের রিপোর্টও উল্লেখিত ৭জনের মধ্যে রয়েছে। তাই চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্তে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪জন হয়েছে।
ডা. রুবেল আরো জানান, আগে আক্রান্ত যে ২জনের রিপোর্ট পুনরায় পজেটিভ এসেছে তারা হলেন চাঁদপুর সদরের কামরাঙ্গা গ্রামে করোনায় মারা যাওয়া ফয়সালের শালিকা এবং অপরজন সেই ব্যক্তি যে ঢাকায় শনাক্ত হয়ে চাঁদপুর এসে সদর হাসপাতাল থেকে পালিয়েছিল। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে ফরিদগঞ্জের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুনরায় সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, শাহরাস্তিতে সনাক্ত হওয়া ব্যক্তির বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেলায় নেই। তাই চাঁদপুরের করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যার সাথে তার নাম যুক্ত হবে না। সে হিসেবে, সিভিল সার্জনের মতে চাঁদপুরে সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা ২৮জন।
যদিও আক্রান্ত ওই লোক শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে নমুনা দিয়েছিলেন। একদিন তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। চাঁদপুরের মতলব উত্তরে প্রথম সনাক্তকৃত রোগীর ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছিল। তার বাড়ি ছিল রংপুরে, তিনি আক্রান্তের পর ঢাকায় চিকিৎসা নিয়েছিলেন। এমন আরো কয়েকজনের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল। চাঁদপুর জেলার পরিসংখ্যানের সাথে তাদের নাম যুক্ত হলেও এই প্রথম নিয়ম/প্রথার ব্যত্যয় ঘটলো। যদিও তার করোনা পজেটিভ রিপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে চাঁদপুরের শাহরাস্তি এবং তার রিপোর্ট চাঁদপুরের ২৭টি রিপোর্টের সাথে একযোগে এসেছে।
উল্লেখ্য, সোমবার পর্যন্ত চাঁদপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২জন। রোববার পর্যন্ত যা ছিল ১৯। আর মৃতের সংখ্যা ছিল ৩জন। অর্থাৎ দু’দিনের ব্যবধানে চাঁদপুরে রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়লো, বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও।
মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চাঁদপুর মোট মোট নমুনা (স্যাম্পল) পাঠানো হয়েছে ৫৪৯জনের। এর মধ্যে মঙ্গলবার পাঠানো ৩৯জনের নমুনাও রয়েছে। মোট রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৪৪৭জনের। রিপোর্ট অপেক্ষমান ১০২জনের।