নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট এলাকায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত্যুর হার ব্যাপক হারে বেড়েছে। শুক্রবার একদিনে বাবুরহাট, পুলিশ লাইন্স ও মৈশাদী এলাকার ৮জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর মৈশাদীর মৃত টেলু বকাউল (৩৫)ও রয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩জন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাবুরহাট ও আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে বাবুরহাট বাজারকে কারফিউ অথবা কড়া লকডাউনের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন।
চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণের পর থেকে বিশেষ করে লকডাউনের পর বাবুরহাট বাজারে মানুষের উপস্থিতি ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। ওই এলাকার নিয়মিত লোকজন ছাড়াও চাঁদপুর শহর, মতলব এমনকি হাজীগঞ্জ থেকেও অনেকে এসে সেখানে কেনাকাটা করা শুরু করেন।
বিশেষ করে গত ঈদের আগে চাঁদপুর শহর ও হাজীগঞ্জের কাপড়ের দোকানপাট বন্ধ থাকায় এসব এলাকা থেকে শত শত মানুষ যেয়ে বাবুরহাট বাজারে ভিড় করেন। ভিড় বাড়ে স্থানীয়দেরও। তখনি সচেতন মহল আশঙ্কা করেছিলেন বাবুরহাট এলাকায় করোনা ব্যাপক হারে সংক্রমিত হতে পারে। এ নিয়ে চাঁদপুর প্রবাহসহ গণমাধ্যমেও ব্যাপক লেখালেখি হয়।
মাঝখানে প্রশাসনের উদ্যোগে বাবুরহাট বাজারের কাঁচা বাজার ও মাছ বাজার বাবুরহাট কলেজ মাঠে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ব্যবসায়িক স্বার্থে সেই বাজার আবার মূল বাজারে ফিরিয়ে আনে একটি সিন্ডিকেট। এতে বাজারে মানুষের উপস্থিতি আরো বেড়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রমজান মাস থেকেই বাবুরহাট বাজার এলাকায় অনেকেই করোনার উপসর্গে ভুগতে শুরু করে। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষায় ইতোমধ্যে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। কিন্তু অনেকেই উপসর্গ গোপন করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এতেও করোনার সংক্রমণ ও ঝুঁকি দিন দিন বেড়ে চলেছে।
করোনায় আক্রান্ত বাড়ার পাশাপাশি ঈদের পর থেকে বাবুরহাট ও আশপাশের এলাকায় একের পর এক উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার একদিনে বাবুরহাট বাজার সংলগ্ন দুই বাড়ির ৩জন করোনার উপসর্গে মারা যান। মৃত্যুর পর তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা। এছাড়া বাবুরহাটের পল্লী চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাবেক খেলোয়াড়সহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক অতি সম্প্রতি মারা গেছেন।
এ অবস্থায় বাবুরহাট এলাকার সচেতন লোকজন সেখানে জরুরী ভিত্তিতে কঠোর লকডাউন অথবা কারফিউ জারির দাবি তুলেছেন। এ ব্যাপারে তারা চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপ কামান করেছেন।