নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের দু’টি বৃহৎ সেচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত কৃষিনির্ভর চাঁদপুর জেলায় চলতি বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষাবাদ ও ধান উৎপাদনে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪৪ মে.টন বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। জেলা কৃষি স¤প্রাসরণ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলা কৃষি স¤প্রাসরণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন জানান, এবার চাঁদপুরে বোরো ধানের চাষাবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবার বোরোর অনেক ভালো ফলন হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার ধান কাটা ও চাষাবাদ মৌসুমে কৃষকদের কোনো প্রকার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। চাষাবাদের সময় আবহাওয়াও অনুক‚লে ছিল। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কারণে সেচ দেওয়া গেছে সময় মতো। সরকার সার, বীজ ও সরকারি প্রণোদনাও দিয়েছে যথাসময়ে। ধানের বর্তমান মূল্যও অনেক ভালো।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬১ হাজার ২শ’ জমিতে- বোরো চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৫২ হাজার ৮শ’ ৪২ মে.টন। এর বিপরীতে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৬শ’ ৮৬ মে.টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। আবাদ হয়েছিল ৬১ হাজার ২শ ৮৫ হেক্টরে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪৪ মে. টন বেশি হয়েছে।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার এককভাবে উন্নত ফলনশীল ৫১ হাজার ৭শ’ ৭৬ হেক্টর চাষাবাদ এবং হেক্টর প্রতি ৪শ’ ১০ মে.টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ২শ’ ২৮ মে.টন। হাইব্রিড ৮ হাজার ৫শ’ ৫১ হেক্টর চাষাবাদ এবং হেক্টর প্রতি ৪৯৫ মে.টনে উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৩ শ’২৭ মে.টন।
উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭শ মে.টন বিআর ২৮, ২৯ ও ৫৮ বোরো বীজ বরাদ্দ দিয়েছে দেশের কৃষি বিভাগ। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত কৃষকগণ সরাসরি চাঁদপুর বীজ বিপনন কেন্দ্র থেকে বা কৃষিবিভাগের অনুমোদিত ১২৩ জন ডিলারের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করতে নির্দেশ ছিল। ১০ কেজিপ্রতি ব্যাগের মূল্য ৫৫০ টাকা, মান ঘোষিত ৪৮০ টাকা এবং সুগন্ধি ৫৮০ টাকা করে মূল্য সংযোজন করা হয়েছে।
চাঁদপুররে ৮ উপজলোয় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকে ২০২০-২১ র্অথবছরে ৩০৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা কৃষি ও অন্যান্য খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ও বেসরকারি ২৪ টি ব্যাংকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংকের এক তথ্যে জানা গেছে। এ পর্যন্ত ২০৭ কোটি ৪২ লাখ ৯২ হাজার টাকা বিতরণ।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে ২২,২৩১ মে.টন, মতলব উত্তরে ৩৭,৬৭০ মে.টন, মতলব দক্ষিণে ২০,২শ ৫৮ মে.টন, হাজীগঞ্জে ৪০,২৮২ মে.টন, শাহরাস্তিতে ৪০,৪১২ মে. টন, কচুয়ায় ৪৯,৫১১ মে.টন, ফরিদগঞ্জে ৪০,৫৭৩ মে.টন এবং হাইমচরে ২,৭৫০ মে.টন ধান উৎপাদন হয়েছে।