শরীফুল ইসলাম :
মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে চাঁদপুরের নৌ-সীমানায় সোমবার মধ্যরাত থেকে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ বন্ধ রয়েছে। মাছ ধরার এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। চাঁদপুর নৌ-সীমানার ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকার পদ্মা-মেঘনা নদী এখন জেলেশূন্য। এর ফলে চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ বড়স্টেশন মাছঘাট এখন মাছশূন্য ও জনশূন্য হয়ে পড়েছে।
সোম ও মঙ্গলবার বড়স্টেশন মাছঘাটে ঘুরে দেখা গেছে, মৎস্য আড়তে মাছের আমদানি না থাকায় অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত মাছের আড়ত অভয়াশ্রম থাকার কারণে এখন একেবারেই ফাঁকা। অথচ এক আগেও এখানে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রচন্ড ভিড়। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। যারা এখনো এই পেশায় যুক্ত আছেন, তারা মাছঘাটে খেলে-বসে সময় কাটাতে দেখা গেছে।
এদিকে চাঁদপুর জেলা ট্রাস্কফোর্সের উদ্যোগে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। সোমবার মধ্যরাত থেকে নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি বলেন, অভয়াশ্রমের ২২ দিন নদীতে কোনভাবেই জেলেদের নামতে দেয়া হবে না। চাঁদপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বড়স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী রুবেল গাজী বলেন, রোববার পর্যন্ত মাছঘাটে ইলিশের আমদানি ভালো ছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইলিশ কিনতে এখানে মানুষ এসেছেন। ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে ঘাটে কোনর ক্রেতা আসে না। মূলত সবাই ইলিশের জন্যই ঘাটে আসে। যারা আসছেন প্রয়োজন। কোন ব্যবসায়ী এখন প্রয়োজন ছাড়া ঘাটে আসবে না।
চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের শ্রমিক রফিকুল বলেন, ঘাটে মাছ আসলে আমরা ভালো থাকি। এখন মাছ নাই, আমরা ভালো নাই। বসে বসে সময় পার করছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন কাজে চলে গেছে। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আমাদের কাজ আবার শুরু হবে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে এখন মাছ ধরা নিষেধ। এর আগে আড়গুলোতে আমরা প্রচুর ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি করেছি। অভয়াশ্রম থাকার কারণে আমাদের মাছ কেনা-বেচা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পুরো আড়তই এখন মাছশূন্য রয়েছে।