নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতাল চত্বরে স্থাপিত লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। সোমবার রাতে প্রথম বারের মতো লিকুইড অক্সিজেন আসার পর প্লান্টের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। মঙ্গলবার দিনভর অক্সিজেন সরবরাহের ট্রায়াল চলেছে। অক্সিজেনও সরবরাহ করা হয়েছে হাসপাতালে। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্লান্ট উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ভার্চুয়ালি চাঁদপুর সদর আসনের এমপি ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করবেন। তবে উদ্বোধনের আগেই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের সময় থেকে সদর হাসপাতালের অনেক রোগী সেখান থেকে অক্সিজেন পাওয়া শুরু করেছেন। চাঁদপুরে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলাকালে প্লান্ট চালুর খবরে জেলাবাসীর মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে মানুষের সেই স্বস্তির খবর জানা যাচ্ছে।
চাঁদপুর সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে নির্মিত অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের সব কাজ প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শেষ হলেও লিকুইড অক্সিজেনের অভাবে এতদিন এর কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছিল না। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহুল প্রত্যাশিত লিকুইড অক্সিজেন এসে পৌঁছে সোমবার (২ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী অক্সিজেন লোড করা হয় প্লান্টে। এরপর শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম (ট্রায়াল)।
সোমবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে জরুরী তরল গ্যাস সরবরাহের একটি গাড়িযোগে সদর হাসপাতালে স্থাপনকৃত অক্সিজেন প্লান্টের সাড়ে ৮ হাজার ধারণক্ষমতার ট্যাংকিতে সাড়ে ৩ হাজার মিলিলিটার লিকুইড অক্সিজেন লোড করেন স্পেক্ট্রা অক্সিজেন লিমিটেড কোম্পানীর কর্মীরা। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিব-উল-করিম, চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল।
স্পেক্ট্রা অক্সিজেন লিমিটেড কোম্পানীর কর্মীরা জানান, লিকুইড অক্সিজেন লোড করার পর সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রায়ালের সময় থেকেই সদর হাসপাতালের রোগীরা লিকুইড অক্সিজেন পাওয়া শুরু করবে। লিকুইড অক্সিজেন থেকে কম্প্রেসারের মাধ্যমে রূপান্তরিত অক্সিজেন রোগীদের সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিতভাবে এই প্লান্টে লিকুইড অক্সিজেন লোড করা হবে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, লিকুইড লোড করলেই সবাইকে অক্সিজেন দেয়া সম্ভব হবে না। অক্সিজেন মিটারসহ ভিতরে আরো কিছু আনুষঙ্গিক কাজ বাকী রয়েছে। মিটার আসলে এবং লাইন ক্লিয়ারসহ সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সব রোগীরা লিকুইড অক্সিজেন পাবে। তবে ট্রায়াল অবস্থায় কিছু রোগী প্লান্টের অক্সিজেন সেবা পাবে।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, স্পেক্ট্রা অক্সিজেন কোম্পানির লোকজন টাংকিতে লিকুইড অক্সিজেন ভর্তি করছেন। এখন তারা পরীক্ষামূলকভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আর এই পর্যবেক্ষণের মাঝেও কিছু রোগী অক্সিজেন সেবা পেতে পারেন।
এদিকে চাঁদপুরে এই লিকুইড অক্সিজেন আসার খবরে চাঁদপুরবাসীর মাঝে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। আর এই লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টটি চালু হলে অক্সিজেন সংকট থেকে মুক্তি পাবে সদর হাসপাতালের রোগীরা। উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন তথা করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মোট রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশ রোগী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।