নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি ও অভিযুক্ত ধর্ষক আমজাদ মাহমুদ নিয়ল (২১) কে আটক করেছে পুলিশ। সে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার তার অবস্থান শনাক্ত করে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বুধবার তাকে চাঁদপুরের আদালতে সোপর্দ করা হবে। এর আগে একই মামলায় তার মা শাহানাজ বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, আব্দুল মাজেদ(৫৪) ও শাহানাজ বেগম(৪৫) দম্পতি চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ কর্মরত। তাদের উভয়ের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরশফী গ্রামে। তারা চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেছ এলাকার সিরাজ বরকন্দাজের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছে। উক্ত দম্পতি তাদের একই গ্রামের এক তরুণীকে দিয়ে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করিয়ে আসছিল।
ওই দম্পতি তাকে দিয়ে বাসার কাজ করিয়ে আসলেও তাকে কোন টাকা দেয় নাই। এই দম্পতি অফিসে চলে গেলে তাদের ইউনিভাসিটিতে পড়ুয়া ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় (২১) গৃহকর্মীকে ১ বছর ধরে বাসার মধ্যে একা পেয়ে ধর্ষণ করে আসছিল। গৃহকর্মী বিষয়টি আব্দুল মাজেদ দম্পতিকে অবহিত করলে তারা বিষয়টিতে কর্ণপাত না করে উল্টো তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করে।
সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে আব্দুল মাজেদ দম্পতি অফিসে চলে গেলে এই সুযোগে তাদের পুত্র আমজাদ মাহমুদ নিলয় গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি সর্বশেষ ঘটনার বিষয়টি আব্দুল মাজেদ দম্পতিকে জানিয়ে প্রতিকার চাইলে শাহনাজ বেগম ও তার ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।
ভুক্তভোগী গৃহকর্মী তাদের দীর্ঘ দিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ এপ্রিল আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুল মাজেদ দম্পতির বাসা হতে রাস্তায় বের হয়। থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধারপূর্বক তার কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয় এবং ওই দিন’ই শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এই সংক্রান্তে তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর আবেদনের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা (নং ১, তাং ০১/০৫/২০২১, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন) রুজু করে শাহনাজ বেগমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।