নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের পূর্ব ষাটনলে চোখ উপরে সোহেল রানা (৩০) নামের দর্জির কাজ করা এক যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের পূর্ব ষাটনলে খালের পাশ্ববর্তী কবরস্থানের পাশের ধান খেত থেকে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করে মতলব উত্তর থানা পুলিশ।
সোহেল পূর্ব ষাটনল ইউনিয়নের মৃত নূরুল হক পাঠানের ছেলে। ৪ ভাই, ৪ বোনের মধ্যে সোহেল চতুর্থ। সোহেল রানা ষাটনল কনু মার্কেটে দর্জির কাজ করতেন।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে সোহেল রানা তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে বিকেলে সোহেল বাড়িতে ফিরেন। রাতে তার মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে সোহেল বদরপুর লেংটার মেলায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে আর বাড়ি ফিরেননি সোহেল। ভোরে ফজর নামাজ পড়ে তার মা তার ছেলে রাতে বাসায় না ফেরায় চিন্তা পড়েন। তিনি তার ছেলের খুঁজে বের হন। সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে মা তাদের পারিবারিক কবরস্থানে যান।
প্রতিদিন সকালে সোহেল বাবার কবর জেয়ারত করতে সেখানে যান বিধায় মা সেখানে সর্বশেষ খুঁজতে কবরস্থানে যান। তার মা তাদের পারিবারিক কবরস্থানে গিয়ে প্রথমে তার ছেলের সার্ট, গামছা দেখতে পেয়ে হতভাগ হয়ে যান। তার স্বামী (সোহেলের বাবার) কবরের সামনে পূর্ব পাশের ধান খেতে সোহেলের লাশ দেখতে পেয়ে তিনি চিৎকার দেন। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে স্থানীয়রা ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলমকে জানান।
পরে ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি মতলব উত্তর থানা পুলিশকে খবর দেন। এরপরই সকাল ১০টার সময় ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল ও ওসি (তদন্ত) মোঃ মাসুদুর রহমান ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠান। দুর্বৃত্তরা সোহেলের চোখ দু’টি উপরে ফেলে। এছাড়া তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। এদিকে দুর্বৃত্ত কর্তৃক নিহত দর্জি দোকানদার সোহেলের কোনো পূর্ব শত্রুতা নেই বলে তার মা জানিয়েছেন। প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছেন এলাকাবাসী।
ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলম বলেন, নিহত সোহেল ষাটনল কনু মার্কেটে দর্জির কাজ করতেন। আজ (শনিবার) সকালে সোহেলের হত্যাকান্ডের সংবাদ পাই। আমি বিষয়টি সাথে সাথে থানা পুলিশকে জানাই। আমি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানান।
মতলব উত্তর থানার ওসি মুহাম্মদ মুহাম্মদ জাহান কামাল জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক লাশের সংবাদ পাই। সংবাদ পাওয়ার পর আমি এবং ওসি তদন্ত আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই। লাশটি এটি একটি হত্যাকান্ড। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। তার চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। পিবিআই ও গোয়েন্দা পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। খুব শীঘ্রই এ হত্যাকান্ডের নেপথ্য কারণ, রহস্য সব কিছু বের করা হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মঈনুল হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) ইয়াছির আরাফাত, মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ।