নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুরে ইউনিয়নের ৪ মামলার আসামি মনির হোসেন মিন্টু প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে গণধর্ষণ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীকে চাপ প্রয়োগ করে ও তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে অসহায় যুবকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট গণধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে অভিযোগে প্রকাশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন পরে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মিন্টুর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসে। অবশেষে ভিকটিম রিনা বেগম পুরো ঘটনাটি সাজানো ও গণধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে ১৬৪ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আদালতে জবানবন্দি দেয়।
পুলিশ গোয়েন্দা সংস্থা ও সংবাদকর্মীরা গণধর্ষণের বিষয় জানতে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মামলার বাদী মনির হোসেন মিন্টু একজন চিহ্নিত মাদকস¤্রাট। কিছুদিন পূর্বে তিন কেজি গাঁজাসহ তার বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ আটক করেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে এসে স্ত্রীকে দিয়ে এলাকার প্রতিবাদী যুবকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের টাওয়ারখালী গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মনির হোসেন মিন্টু দুইটি বিয়ে করেছেন। মাদক বিক্রি করে সে দুটি বাড়ির মালিক হয়েছেন। মাদক বিক্রিতে যারা বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করেন।
মামলার স্বাক্ষী পারুল বেগম ও তার স্বামী বাবুল পাটোয়ারী জানান, স্বামী-স্ত্রী প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ করে মারামারি করতো। ঘটনার দিন রাত ৩টায় মিন্টু তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করলেন স্ত্রী এসে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু কী কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মারামারি হয়েছে তা জানায়নি আর গণধর্ষণের ঘটনা সেখানে ঘটেনি এলাকার মানুষ তা জানেন। পুলিশ তদন্ত করেও ঘটনাটি যে মিথ্যা তার প্রমাণ পেয়েছে। কিছুদিন পূর্বে মিন্টুকে মাদকসহ আটক করলে দীর্ঘ দিন জেল খেটে অবশেষে বেরিয়ে এসে অহেতুক স্থানীয় যুবকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে পুলিশ জানায়, গণধর্ষণের ঘটনায় স্বামী বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু স্ত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেই অস্বীকৃতি করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী মিন্টুর স্ত্রী ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন তার সাথে কোনো ধরনের গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। স্বামী চাপ প্রয়োগ করে এই মিথ্যা ঘটনা বলে মামলাটি দায়ের করেন। তবে এ ঘটনায় মিথ্যা মামলা দায়ের করায় বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
এ বিষয়ে হাসপাতলে আরএমও ডাক্তার হাসিবুল হাসান চৌধুরী আসিফ জানান, গণধর্ষণের যে অভিযোগটি করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। কারণ এ রকম কোন সিমটম ভিকটিমের শরীরে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি বলে ভিকটিম নিজে স্বীকার করেছেন।
বাদী মিন্টুর স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগম জানান, স্বামী বিভিন্ন সময় বেদম মারধর করতো। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বিবাদ হতো। গণধর্ষণের কোন ঘটনা আমার সাথে ঘটেনি। স্বামী শত্রুতাবশত ওদেরকে আসামি করে মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেছেন। ঘটনাটি যে মিথ্যা তা পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আমি নিজেই সাক্ষ্য দিয়েছি।
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ জানান, এই ইউনিয়নে এই গণধর্ষণের ঘটেনি। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা এই ধরনের ঘটনা সাথে জড়িত নয়। গণধর্ষণের ঘটনায় যে বাদী হয়েছে সেই মিন্টু কিছুদিন পূর্বে মাদকসহ পুলিশের হাতে গাঁজাসহ গ্রেপ্তার হয়েছে।