নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত অবস্থায় যশোর হাসপাতাল থেকে পালানোর ৬ দিন পর ইউনুস গাজীকে চাঁদপুর শহরের বিপণীবাগ এলাকা থেকে আটক করেছে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। বুধবার রাতে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেনের নেতৃত্বে এসআই আনোয়ার হোসেন ও এএসআই মহিউদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ বিপণীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
আটকের পর ইউনুস গাজীকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। ইউনুসকে আটককালে সঙ্গে থাকা তার মা, ফুফু ও ফুফাতো বোনকেও পুলিশ পাহারায় এনে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইশোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের ৪জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ইউনুসসহ ৩জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ এসেছে। তার ফুফুর রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসায় তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে এনে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৩ মে যশোর হাসপাতাল থেকে ভারত ফেরত ভারতের করোনা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ফরিদগঞ্জের ইউনুছ গাজী পালিয়ে যায়। ইউনুস পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর অবশেষে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই ক’দিনে ইউনুস গাজী ঢাকা থেকে চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জে অবস্থান করে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর হাপাসাতালেও পরিচয় গোপন করে চিকিৎসা নিয়েছে সে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করেছে সে। পরিবারের সদস্যদের সাথেও থেকেছে। এর ফলে তার মাধ্যমে চাঁদপুরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২৪ ও ২৫ এপ্রিল যশোর হাসপাতাল থেকে ভারত ফেরত ৭জনসহ মোট ১০জন করোনা রোগী পালিয়ে যায়। গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হওয়ায় ২৬ এপ্রিল রাতে অন্য সব রোগীকে আটক করে হাসপাতালে আনে পুলিশ। এতদিন ধরে পালিয়ে ছিল ইউনুস গাজী।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী জানান, ইউনুস গাজী উপজেলার ১৪নং ইউনিয়নের চররামপুর গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার রাতেই ইউনুসসহ ৪জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৪জনের নুমনা পাঠানো হয়েছে চাঁদপুরস্থ আরটি-পিসিআর ল্যাবে। ইউনুসসহ ৩জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ এসেছে। তার ফুফির রিপোর্ট করোনা পজেটিভ। এ কারণে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, ইউনুস গাজীর মাধ্যমে চাঁদপুরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পরিচয় গোপন করে সে সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া সে তার ফুফির বাসায় অবস্থান করার পর তার ফুফির করোনা শনাক্ত হওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। তার ফুফির নমুনা ঢাকাস্থ আইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে ভ্যারিয়েন্ট পরীক্ষা করার জন্য।