কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে প্রস্তুত হচ্ছে ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলিলিটারের লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ইতিমধ্যে এই অক্সিজেন প্ল্যান্টটির ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর অল্প কিছু কাজ সম্পন্ন হলেই অচিরেই যে কোন সময় লিকুইড অক্সিজেন সেবা পাবে করোনা রোগীসহ অন্যান্য রোগীরা। এটি চালুর পর দ্রুততম সময়ে আইসিইউ চালুরও উদ্যোগ রয়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, গত দুই মাস পূর্বে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলিলিটারের লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টের কাজ শুরু করা হয়। শ্রমিকরা গত দুই মাস ধরে টানা কাজ করে চলেছেন। লিকুইড অক্সিজেন স্থাপনের ভবন এবং অক্সিজেন সংরক্ষন করার ট্যাংকির কাজও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, এখন বেকওয়াম প্লান্ট, কমরেস্ট ইয়ার প্লান্ট ও অটোমেটিক মেনিহোল কন্ট্রোল বোর্ডসহ অল্প কিছু কাজ বাকী রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
পূর্বে থেকে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েছে চাঁদপুর জেলা। এতে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়। কুমিল্লা থেকে প্রায় প্রতিদিনই চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন আনতে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। যার কারণে চাঁদপুরেই স্থাপন করা হয়েছে এই লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্ল্যান্টটি বসানোর কাজে অর্থায়ন করছে ইউনাইটেড ন্যাশন ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ইমার্জেন্সি ফান্ড (ইউনিসেফ) এবং বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
প্ল্যান্ট বসানোর কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলী কামাল বলেন, চাঁদপুরসহ দেশের প্রায় ৩০টি জেলায় ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলিলিটারের ধারণ ক্ষমতার লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হচ্ছে। মূল প্ল্যান্টটি হচ্ছে ছয় হাজার লিটারের। এটি যখন অক্সিজেনে রূপান্তর হয়, তখন ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলিলিটারে রূপান্তর হয়। এটির কাজ সম্পন্ন হলে চাঁদপুরের চাহিদা অনুযায়ী যে কোনো সময় লিকুইড অক্সিজেন পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, গত দুই মাস পূর্বে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এই লিকুইড অক্সিজেনের কাজ শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ সম্পন্ন হলেই এটি চালু করা হবে। এতে রোগীরা খুব সহজেই লিকুইড অক্সিজেন সেবা পাবেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিব উল করিম বলেন, অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন চাঁদপুরবাসীর জন্য একটি সুখবর। বর্তমানে আমরা কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন আনছি। তাতে ভোগান্তি এবং খরচ দু’টোই হচ্ছে। লিকুইড প্ল্যান্টটি স্থাপিত হলে আমাদের জেলার বর্তমান চাহিদা পূরণ করে এবং চার-পাঁচ মাসের অক্সিজেন মজুদ থাকবে। এছাড়া এখান থেকে অন্য জেলায় অক্সিজেন সরবরাহও করা সম্ভব হবে।