চাঁদপুরে স্বামীকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা : স্ত্রী আটক

কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুরে পারিবারিক কলহে বিল্লাল ছৈয়াল (৪০) নামের এক যুবককে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার পূর্ব জাফরাবাদ মিজি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। আহত বিল্লাল ছৈয়াল পূর্ব জাফরাবাদ মিজি বাড়ির মৃত শামসল ছৈয়ালের ছেলে।

আহত যুবক বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোরশেদ ঘটনাস্থল থেকে স্ত্রী হাওয়া বেগমকে আটক করেছে।

আহতের মামা বাবুল মিজি ও তার খালা জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের আবুল হোসেন খানের মেয়ে হওয়া বেগমের সাথে প্রায় ১৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে এক মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।

তাদের অভিযোগ, হাওয়া বেগম চরিত্রহীনা হওয়ায় প্রায় সময় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক বিষয় নিয়ে অনেক ঝগড়াঝাটি হতো। ঘটনার দিন রাতেও একই বিষয় নিয়ে বিল্লাল ও তার স্ত্রী হাওয়া বেগমের মাঝে বাক-বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এক সময় বিল্লাল রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন।

এর পূর্বে হাওয়া বেগম তার স্বামীকে খাবারের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দেন। বিল্লাল ঘুমিয়ে যাওয়ার সুযোগে তার স্ত্রী হাওয়া বেগম স্বামীর চোখে-মুখে সুপার গ্লু (আইকা) দিয়ে তার বুকে চড়ে বসে ব্লেড দিয়ে গলায় আঘাত করেন। একই সাথে ঘাড়ের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে তার স্ত্রী হাওয়া।

ব্লেডের আঘাতে বিল্লাল রক্তাক্ত হয়ে চিৎকার করে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টার সময় পার্শ্ববর্তী লোকজন টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে পরবর্তীতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুরানবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোরশেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত হাওয়া বেগমকে আটক করে চাঁদপুর মডেল থানায় সোপর্দ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাওয়া বেগম বলেন, আমাদের বিবাহ হওয়ার পর থেকে আমার স্বামী ঠিক মতো কাজকর্ম করে না। সে নেশায় আসক্ত থাকে। ঘটনার দিনও সে নেশা করে এসেছে। আমি কাল রাতে ব্লেড দিয়ে হাতের নখ কাটতে ছিলাম। কাল রাতেও তার নেশা করার বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার এক পর্যায়ে সে আমাকে মারতে আসলে দু’জনের ধস্তাধস্তিতে আমার হাতে থাকা ব্লেডে তার গলায় আঘাত লাগে। আমি তাকে মারার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কাজ করিনি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, এমন ঘটনার খবর পেয়ে পুরানবাজার ফাঁড়ি পুলিশ সদস্য ওই নারীকে আটক করে থানায় দিয়েছেন। আহতের বড় ভাই সাজু বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)