চাঁদপুরে হাসপাতালের বিল পরিশোধে সন্তান বিক্রি : প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফেরত

শরীফুল ইসলাম :
গণমাধ্যম ও প্রশাসনের সহযোগিতায় মায়ের কোলে ফিরে এলো ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি নবজাতক ছেলে। সন্তানকে ফিরে পেয়ে অভাবী মা তামান্না খুশিতে আত্মহারা। বৃহস্পতিবার রাতে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকা থেকে নবজাতক উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন।

নিজেদের ঘর নেই, বাড়ি নেই। বসবাস করেন টিনসেটের ভাড়াবাড়ির ছোট একটি রুমে। বর্তমানে অন্যের সহযোগিতা নিয়েই দিন কাটে তাদের। অভাব অনটন তাদের নিত্যসঙ্গী। দুই সন্তান নিয়ে অভাব অনটনের মধ্যে চলছিল তামান্নার সংসার। এর মধ্যেই তৃতীয় সন্তান হওয়ার খবর শুনে তামান্নার স্বামী দিনমজুর আলম তাকে ছেড়ে চলে যায়।

গেল ২৬ জানুয়ারি প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পালস-এইড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি হাসপাতালে। সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। হাসপাতাল ও ঔষধ খরচের ব্যয় বহন করতে না পেরে ৫০ হাজার টাকায় বাধ্য হয়ে নাড়ি ছেড়া ধন বিক্রি করেন স্থানীয় এক নি:সন্তান দম্পত্তির কাছে।

এই ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। পরে গণমাধ্যম ও প্রশাসনের সহায়তায় মা এর কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয় নবজাতককে। নবজাতক শিশুকে পেয়ে খুশি পরিবার সবাই।

নবজাতকের মা তামান্না বেগম বলেন, বুকের সন্তানকে হারিয়ে পাগলেরমত হয়ে গেছিলাম। কতটা অসহায় হলে সন্তান বিক্রি করতে হয়। আমি সাংবাদিক এবং ইউএনওর উপর কৃতজ্ঞ, তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। যাদের কাছে সন্তানকে বিক্রি করেছি, তারও আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ দেখে টাকা নিবেনা বলেছে।

তামান্না গত ২ ফেব্রুয়ারি ছেংগারচর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্যের বারোআনি এলাকার বাসাভাড়া নেয়। তাদের আর্থিত অবস্থা খুব খারাপ। যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন স্থানীয়রা।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী মো. শরিফুল হাসান বলেন, নবজাতক বিক্রির বিষয়টি জানতে পারি এবং রাতে ষাটনল এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেই। মূলত নবজাতকের মা এবং নানী আর্থিক সমস্যার কারনে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে বিক্রি করে দেয়। উপজেলার প্রশাসনের মাধ্যমে তাদেরকে সহায়তা করার চেষ্টা করা হবে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন