শরীফুল ইসলাম :
সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে দীর্ঘ ১৭ বছর পর চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করা হয়েছে। এখন চলছে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া। খুব শীঘ্রই নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছে আসছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ চাঁদপুর জেলা শাখা। নতুন কমিটিতে আসতে নেতাদের প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। শুরু হয়েছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। কেন্দ্রীয় কমিটিতে শীর্ষ পদে আসতে ইচ্ছুকদের তালিকাও বড় হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ চাঁদপুর জেলার আহ্বায়ক কমিটি গত ১৭ জুন কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাতিল ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমানের নির্দেশে চাঁদপুর জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে অচিরেই নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে চাঁদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় আহ্বায়ক ছিলেন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীর হোসেন পাটওয়ারী এবং যুগ্ম আহবায়ক পদে ছিলেন মিঠুন ভদ্র। এরপর দ্বিতীয় কমিটি ২০০৪ সালে তিন মাসেন জন্য আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এস এম জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম আহবায়ক এম এ হাসান লিটন। এ কমিটি প্রায় ১৭ বছর পর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এখন তৃতীয় কমিটিতে কারা আসছেন, সেই অপেক্ষা সকলের।
এদিকে এবার নতুন কমিটিতে সংগঠনের জন্য পরিশ্রমী, মেধাবী এবং প্রতিশ্রæতিশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। এমন প্রত্যাশা করছেন সংগঠনের সাবেক ও নতুন কমিটিতে আসা আগ্রহীরা। অন্যদিকে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নতুন নেতৃত্বে আসতে লেখালেখি শুরু হয়। অনেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ চেয়ে ফেসবুকে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটিতে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে- সভাপদি পদে সংগঠনের সাবেক সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র অ্যাড. হেলাল হোসাইন, সাবেক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এম এ হাসান লিটন, ফেরদৌস মোরশেদ জুয়েল ও মজিবুর রহমান মজিব, শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক অ্যাড. হাবিবুর রহমান লিটু। সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা যুবলীগের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী, সংগঠনের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কে এম মাসুদসহ আরো কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
সংগঠনের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কে এম মাসুদ বলেন, আমি এই কমিটিতে দীর্ঘ ১৭ বছর যুগ্ম আহবায়ক ছিলাম। তবে বড় বিষয় হলো সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় রাজনীতিতে কোন তৃপ্তি ছিল না। আমি নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে ইচ্ছুক। আশা করি নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাংগঠনিক ভাবে এগিয়ে যাবে।
সভাপতি প্রার্থী ফেরদৌস মোরশেদ জুয়েল বলেন, আমাকে ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই কেন্দ্রীয়ভাবে কো-অপ্ট করে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক করেন। প্রায় দুই বছর চাঁদপুর স্বেচ্ছাসেবক লীগকে গতিশীল করার লক্ষে আহ্বায়ক কমিটির সকলকে সাথে নিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। গত দু’বছরে সকল কার্যক্রম করে। যা আগে কখনো করা হয়নি। সকল নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ গুরুত্বপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। যা বর্তমানে সকলের কাছে প্রশংসা অর্জন করে। আমি সাংগঠনিক দায়িত্ব পেলে এই সংগঠনকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃত্বে যারা বিভিন্ন কমিটিতে স্থান পায়নি, তাদের সাথে নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবো। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ আমাকে যদি দায়িত্বদেয়, তাহলে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে পুরো দেশের মধ্যে অন্যতম একটি সংগঠনে রূপান্তরিত করবো।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক এস এম জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে কমিটিতে ছিলাম। আমরা এইটুকু বলতে পারি, আমাদের মধ্যে কোনরূপ দুর্নীতি কিংবা অপকর্ম করেনি। আমরা স্বচ্ছভাবে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছি। নতুন এই কমিটিতে সভাপতি পদে আসবো কি আসবো না, তা এখনো ভেবে দেখিনি। আমি আসি আর যেই আসুক, আমি চাইবো বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতেৃত্বে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।