শাওন পাটওয়ারী :
খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। উৎসাহ-উদ্দীপনা ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে সারাদেশের মতো চাঁদপুরে প্রতিবছর বড়দিন উদযাপন হয়। কিন্তু এ বছর বড়দিন উদযাপনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভক্তি দেখা দিয়েছে। চাঁদপুরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দুই গ্রুপের কোন্দল এখন দৃশ্যমান।
গত বছরও জেলার ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিস্টান সম্প্রদায় একসাথে বড়দিন উদযাপন করেছিল কিন্তু এ বছর দুই গ্রুপ পৃথক স্থানে দিবসটি পালন করেছে। এ বছর কমিটি ও চার্চের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সম্প্রদায় দুই গ্রুপে বিভিক্ত হয়ে পরে। একটি গ্রুপ সম্পাদক সোলেমান মন্ডলের নেতৃত্বে জেলা শহরে অবস্থিত ব্যাপ্টিস্ট চার্চে বড়দিনের অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করছে। অন্যদিকে মনিন্দ্র বর্মনসহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে শহরের খ্রিস্টান মিশন স্কুলে বড়দিন উদযাপন করছে।
দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বড়দিন উদযাপনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাধারণ জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। চার্চের জমি ও কমিটি নিয়ে বিরোধের কারণে দুই গ্রুপে যেন কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মূল ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ও খ্রিস্টান মিশন স্কুলে দু’টি স্থানে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
এ বিষয়ে একটি গ্রুপের নেতা সম্পাদক সোলেমান মন্ডল বলেন, করেনাকাল ও চার্চের পুকুরের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা থাকায় এ বছর বড়দিনের উৎসব উদযাপনে কিছুটা কাটছাট করা হয়েছে।
একটি স্বার্থান্বেষী মহল চার্চের কমিটিকে উপেক্ষা করে আদালতকে অবমাননা করে মিশন স্কুলে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ব্যানার টানিয়ে বড়দিনের উৎসব উৎযাপন করছে। যা দৃষ্টিকটু ও সম্প্রদায়কে অপমান করার সামিল।
অন্যদিকে খ্রিস্টান মিশন স্কুলে উৎসব উদযাপন প্রসঙ্গে মনিন্দ্র বর্মন বলেন, প্রতি রবিবার সকালের প্রার্থনা মিশন স্কুলে ও সন্ধ্যার প্রার্থনা চার্চে হয়ে আসছিল। কিন্তু সোলেমান মন্ডল বেশ কয়েক মাস যাবৎ সন্ধ্যার প্রার্থনা চার্চে করতে বাধা প্রদান করছে। তিনি তার খেয়ালখুশি মতো চার্চের দায়িত্ব নিজের হাতের মুঠোয় রেখে পালন করছে। আমরা যিশুর দেওয়া শিক্ষা পালন করছি তাই আমরা চার্চে বড়দিনের অনুষ্ঠান না করে ঝামেলা এড়াতে এ স্কুলে পালন করছি। সোলেমান মন্ডলের সাথে গুটি কয়েক লোক আছে, আর দেখুন আমাদের সাথে শত শত লোক, কমিটির ১২০জন আমাদের সাথে রয়েছে। এক গ্রুপ মূল চার্চে অন্য একটি গ্রুপ মিশন স্কুলে উদযাপন করছে।
উল্লেখ্য, ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ও খ্রিস্টান মিশন স্কুল দু’টি স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উভয় স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে। খ্রিস্টান মিশন স্কুলের অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের উপস্থিতি অধিক হলেও চার্চে লোকজনের সমাগম তেমন একটা চোখে পড়েনি।