কবির হোসেন মিজি :
আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীদের চাপ। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। গত তিন দিনে শতাধিকের ও বেশি শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বিছানা সংকটে হিমশিম খাচ্ছে রোগী ও রোগীর লোকজনসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসব রোগীদের মধ্যে ডায়রিয়া, বোমি, পাতলা পায়খানা, ঠান্ডা জনিত শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানা গেছে।
বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের ৩য় তলার শিশু ওয়ার্ডে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রচুর রোগী ভর্তি রয়েছে। বিছানা সংকটে হাসপাতালের করিডোর এবং বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা। যেখানে শিশু ওয়র্ডে নির্ধারিত বিছানা রয়েছে মাত্র ৩৯টি সেখানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বুধবার সকাল পর্যন্ত ১০৮জন বলে জানা গেছে। তাই বিছানা সংকটে রোগীদের জন্য মেঝেতে বিছানা পাতা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরেই শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীদের প্রচন্ড চাপ রয়েছে। লোকবল ও বিছানা সংকটে এসব রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম কাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরা। যেখানে শিশু রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য এক শিফটে অন্তত ১৫জন নার্সের প্রয়োজন। সেখানে এক শিফটে মোট চারজন করে নার্স ডিউটি করে থাকেন।
জানা যায়, গত ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল বুধবার পর্যন্ত সকাল পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে সর্বমোট ১০৮জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ এপ্রিল সারাদিনে সর্বমোট ৩৪জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। ১১ এপ্রিল সারাদিন ভর্তি হয়েছে ৩৩জন এবং ১২ এপ্রিল সারাদিনে সর্বমোট ৩৮জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বুধবার দুপুর পর্যন্ত আরো ১০ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে।
তবে ১৩ এপ্রিল বুধবার দিন বেশ কিছু রোগী ছুটি নিয়েছে। বর্তমানে বুধবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে সর্বমোট ১০৮জন শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিভাগে কর্তব্যরত ইনচার্জ সাহানারা বেগম। এদের মধ্যে ডায়রিয়ার আক্রান্ত ১৮জন। বাকীরা অন্যান্য রোগী আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়েছেন।
জানা যায়, চাঁদপুর জেলা শহরে হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনে বয়োবৃদ্ধের পাশাপাশি শিশুরাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এসব রোগীরা ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, খিচুনী এবং নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়া অনেক শিশু রোগীকে অভিভাবকরা হাসপাতালে নিয়ে এসে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যান। একইভাবে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন বয়স্ক রোগীরাও।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুজাউদদৌলা রুবেল এবং ডা. মো. আসিবুল আহসান চৌধুরীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন, হঠাৎ গরম আবহাওয়া পড়ায় বৃদ্ধ এবং শিশুরা হঠাৎ, পাতলা পায়খানা, বোমি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। তাই বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে রোগীদের প্রচুর চাপ দেখা দিয়েছে। এছাড়া বর্তমানে অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরেও ডায়রিয়ার প্রচন্ড প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।