নিজস্ব প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাইক্রোচালক মজনু হত্যা মামলায় বড় ভাই, ২ ভাবী ও ভাতিজা আটক করেছে পুলিশ।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, প্রথমে তদন্তের স্বার্থে মজনুর ছোট ভাই প্রবাসী মফিজের স্ত্রী মাহমুদাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে মজনুর বড় ভাই মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা আক্তার, ভাতিজা কবিরের ছেলে সাইফুলকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদশেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে নিজ ঘর থেকে পা বাঁধা অবস্থায় রক্তাক্ত মজনুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় আটক মাহমুদার হাত ও পা বাঁধা ছিল। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে নিহত মজনুর বড় ভাই সাজুদ্দিনের ছেলে জুয়েল। জুয়েল জানান, মাহমুদার হাত পা বাঁধা ছিল তবে তার এক হাত বাঁধা থাকলে অন্য হাত দড়ি দিয়ে পেঁচানো ছিল। আমি পুলিশ থেকে অনুমতি নিয়েই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
মজনু হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় মিজি বাড়ির বাসিন্দা। ওই বাড়ির আনোয়ার হোসেন মিজির বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন মজনু ও তার পরিবার। মজনুরা আট ভাই। সে পরিবারে সপ্তম সন্তান। পরিবারের সবাই বিবাহিত হলেও মজনু ছিল অবিবাহিত।
মঙ্গলবার সকালে মজনুর ভাই বড় ভাই মন্টু প্রথমে রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে চাঁদপুর পিবিআই ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
মন্টু জানায়, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মজনুদের ঘরের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকে দেখি মজনুর রক্তাক্ত মৃতদেহ লেপ দিয়ে ঢাকা। পরে মায়ের রুমে যাই এবং মাহমুদা ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর ঘরে গিয়ে তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়।
বাড়ির মালিকের মেয়ে উম্মে সাবরিনা বলেন, সকাল সাড়ে ৫টার দিকে মন্টু চিৎকার দিয়ে তার ভাই খুন হয়েছে বলে জানান। পরে তার বোন হিরা আক্তার বাড়ির গেইটের তালা খুলে দেয়। প্রতিদিন মজনুর পরিবার বাড়ির গেইটের তালা বন্ধ করতো।
সাবরিনা আরো জানান, গত সোমবার ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মজনুর ভাইয়ের স্ত্রী মাহমুদা তাদেরকে চা খাওয়ায়। ওই চা খেয়ে সে ও তার মা মাজেদা বেগম, ছেলে নাফিসহ ৫জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন চা তিতা লেগেছিল।
পুলিশের হাতে আটক মজনুর ছোট ভাই প্রবাসী মফিজুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বলেন, রাতে মজনু ভাত খায়নি। শুধু একটু দুধ খেয়েছে। তিতা বলে বেশি খায় নি। পরে মা রুপবান বেগম ও সে দুধ খেয়েছে। রাত ১১ টার দিকে মন্টু ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম ওই বাসায় ছিল। মজনু আসার আগেই মন্টু ও শান্তা তাদের বাসায় চলে যায়।
মাহমুদা আরো জানান, মন্টুর পরিবারের সাথে মজনুর স্বর্ণালংকার ও টাকা লেনদেনের বিষয়ে দীর্ঘ দিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। তাই তারা এক ভাই আরেক ভাইয়ের ছায়া দেখতে পারেনা। এজন্যই মজনু আসার আগে মন্টুরা চলে যায়।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন রনি জানান, মজনু হত্যার রহস্যটি খুবই রহস্য জনক। রাতে কে দরজা খুলে দিলো, কে খুন করলো, কেনইবা খুন করলো সব বিষয়ে বিষদ তদন্তক চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মফিজ ও হত্যার শিকার মজনুর স্ত্রীর সাথে কোন রকম অবৈধ সম্পর্ক আছে কিনা সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।