শরীফুল ইসলাম :
লকডাউন শুরুর আগের দিন রোববার চাঁদপুর শহরে মানুষের ঢল নেমেছে। এ দিন যানজট আর মানবজটে একাকার হয়ে গেছে জেলা শহর। রাস্তা-ঘাট, দোকানপাটে মানুষ আর মানুষ। এ যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আগেই দূরত্ব ভাঙার মহোৎসব। অথচ সারা জেলায় এ পর্যন্ত সর্বাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে চাঁদপুর শহর এলাকায়। চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন, এমন ভিড়ের কারণে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ হতে পারে।
সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া লকডাউনকে ঘিরে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার ও খাবারের দোকান লকডাউনের সময় খোলা থাকবে। এ কারণে খাবার, অর্থসহ অন্যান্য অতি প্রয়োজনীয় কাজ সারতে রোববার সকাল থেকে চাঁদপুর শহরে মানুষের ভিড় লেগে যায়। বেলা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে সেই ভিড়।
লকডাউন ঘোষণার পর রোববার প্রথম অফিস-আদালত খোলা ছিল। এ জন্য মার্কেট, ব্যাংক, কাঁচাবাজার, অফিস ও ডিপার্টমেন্ট স্টোরে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এতে করে করোনা সংক্রমন আরো বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি হকার্স মার্কেটে আসা কামরুন্নাহার বলেন, গতবছরও সরকার হঠাৎ লকডাউন দেয়। এতে করে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারিনি। তাই এখন কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি।
হোটেল ব্যবসায়ী সাইফুল আজম বলেন, আমরা সরকারের নিয়ম মেনে অর্ধেক গ্রাহক হোটেলে বসাচ্ছি। এখন লকডাউনে হোটেল বন্ধ হলে দিনমজুর ও শ্রমিকরা বিপদে পড়বে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের স্বজনরাও খাবার সংকটে থাকবে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো চালু রাখা দরকার।
ট্রাফিক পুলিশের টিআই জহিরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে যানবাহনের মাত্রা বেড়ে গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের মানুষের উপস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করে। প্রত্যেকটি মোড়ে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও হিমশিম খেতে হয়েছে। কেউ কোন নিয়ম মানছে না। সবার আগে নিজেকে সচেতন হতে হবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনাবিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, আজ (রোববার) রাস্তা, হাট-বাজার ও দোকানপাটে মানুষের যে ভিড় লক্ষ্য করছি তাতে এই জেলায় করোনার সংক্রমণ আরো মারাত্মক হতে পারে। এটি খুব আশঙ্কার বিষয়। লোকজনকে আরো সজাগ ও সচেতন হতে হবে।