ফয়েজ আহমেদ :
করোনা প্রাদুর্ভাবের পর থেকে শাহরাস্তি উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেন, নূরানী ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসার সহস্রাধিক শিক্ষক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠান হতে সামান্য বেতনের পাশাপাশি টিউশননির্ভর এসব শিক্ষকরা লকডাউনের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
জানা যায়, মরণঘাতি কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই সংক্রমণ রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটি ও লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা স্বল্প বেতনে চাকুরি করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের রোজকার প্রাইভেট টিউশন নির্ভর। লকডাউনে ঘরে অবস্থানের নির্দেশ থাকায় প্রতিষ্ঠান ও টিউশন বন্ধ থাকায় পরিবারের চাহিদা মেটাতে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব শিক্ষকদের।
জানা গেছে, শাহরাস্তি উপজেলায় ৬৮টি প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেনে ৪৭৬জন, ১২৫টি নূরানী মাদরাসায় ৪৫০জন, ও ৯০টি ফোরকানিয়া মাদরাসায় ৯০জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এসব শিক্ষকদের মাসিক সম্মানি ভাতা অত্যন্ত কম। ফলে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে নিজেদের আর খাপ খাওয়াতে পারছেন না তারা। এছাড়া এ দূর্যোগে সামাজিক কারণে এসব শিক্ষকেরা বিভিন্ন ত্রাণ-সাহায্যের তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত না করলেও বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত দূর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছেন।
শাহরাস্তি পৌর একাডেমির সহকারি শিক্ষক সুফিয়া বেগম জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় ঠিকমতো বেতন পাই না। লকডাউনের কারণে প্রাইভেট টিউশনীও সম্ভব হচ্ছে না। করোনা কালে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছি।
শাহরাস্তি নূরানী কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবীবুল হক মানিক জানান, মাদরাসা বন্ধ থাকায় শিক্ষকদের বেতন দিতে পারি নি। শিক্ষকরা খুব কষ্টে আছেন।
শাহরাস্তি ন্যাশনাল ভিক্টোরী স্কুলের অধ্যক্ষ হাজী নূরুন্নবী রবিন জানান, প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকরা স্বল্প বেতনের চাকুরি করায় বর্তমান সময়ে কঠিন সময় পার করছেন। তাদের সহায়তায় সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শাহরাস্তি কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশানের সদস্য সচিব মোঃ আলী আসগর মিয়াজী জানান, বর্তমান সংকটে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুলগুলো শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছেন না। বর্তমান বাজার দরের সাথে স্বল্প আয়ের শিক্ষকদের খাপ খাইয়ে চলতে বেশ হিমিশিম খেতে হচ্ছে। সামাজিক মর্যাদার কারণে শিক্ষকরা সরকারি ত্রাণ সাহায্যও নিতে পারছেন না। প্রাইভেট শিক্ষকদের সহায়তার জন্য সরকারের পক্ষ হতে প্রণোদনা ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
শাহরাস্তি কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশানের আহবায়ক অধ্যক্ষ মোঃ হুমায়ূন কবীর ভুঁইয়া জানান, প্রাইভেট স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণার জোর দাবী জানাই।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার জানান, আলাদা ভাবে প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকদের সহায়তার ব্যপারে কোন নির্দেশনা নেই। যাদের সাহায্য প্রয়োজন তাদের তালিকা পেলে ইউনিয়নভিত্তিক সহায়তা করা হবে।