ফয়েজ আহমেদ :
শাহরাস্তিতে হাত বেঁধে পানিতে চুবিয়ে জান্নাতুল মাওয়া (৫) নামের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় গৃহপরিচারিকাকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশীদ গ্রামের যুগীনগর তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই বাড়ির মৃত শামসুল হকের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৫) একই বাড়ির মৃত খোরশেদ আলমের মেয়ে বিধবা কাজল রেখার ঘরে গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। ফাতেমা ৪/৫ মাস আগে কাজ হতে অব্যহতি নিয়ে ঘটনার দিন সকালে আবারও কাজল রেখার ঘরে আসে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গৃহপরিচারিকা ফাতেমা কাজল রেখার শিশুকন্যা জান্নাতুল মাওয়াকে তার পুত্র আরাফাতকে (৭) খুঁজে আনতে বলে। আরাফাতকে খুঁজে না আনায় ফাতেমা ক্ষুব্ধ হয়ে ওড়না দিয়ে জান্নাতুল মাওয়ার দু’হাত বেঁধে ঘরের পার্শ্ববর্তী গর্তে চুবিয়ে ফেলে।
পরিবারের লোকজন তাকে না পেয়ে এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি শেষে গর্তের পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
খবর পেয়ে শাহরাস্তি থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শহীদুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক মোঃ গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাতেমা বেগমকে আটক করে।
ভিকটিমের নানী আনোয়ারা বেগম জানান, নাতনীকে পানিতে ভাসতে দেখে তিনি চিৎকার করলে মাঠে কাজ করতে আসা পরানপুর গ্রামের আলী আকবর মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় এলাকার লোকজনের সামনে ফাতেমার ছেলে আরাফাত (৭) জানিয়েছে, সে তার মা কর্তৃক জান্নাতুল মাওয়াকে হাত বেঁধে পানিতে ফেলতে দেখেছে।
এলাকার লোকজন জানান, ৭ বছর আগে আটক ফাতেমার সাথে তার স্বামী আঃ কাদেরের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, এরপর হতে শিশু পুত্র আরাফাতকে নিয়ে সে পিত্রালয়ে বসবাস করছে।
একইভাবে ৫ বছর পূর্বে স্বামীর মৃত্যুর পর ভিকটিমের মা কাজল রেখা পুত্র শুভকে (১০) শশুর বাড়ি পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর গ্রামে রেখে ছোট সন্তানকে (ভিকটিম) নিয়ে পিত্রালয়ে বসবাস করতেন। ভিকটিম বলশীদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে পড়তো।
শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম জানান, প্রাথমিক তদন্তে শিশুটিকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভিকটিমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।