শরীফুল ইসলাম :
৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবসে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। এবারের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় গৌরবের ৩০ বছর পূর্তিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। বুধবার দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। এর আগে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীত ও পতাকা তুলে বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস আর একই দিনে আমার জন্মদিন। শত্রুমুক্ত দিনে আমার জন্ম। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এই নাড়ির টানেই চাঁদপুরের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। চাঁদপুর থেকে আমাকে আলাদা করা যাবে না। শেকড় আর মাটির টানে আমাকে এখানে ছুটে আসতে হয়। আজ চাঁদপুর মুক্ত দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব জন্মশতবার্ষিকতে বিজয় মেলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একাত্তর ও পঁচাত্তরেরর পরাজিত শক্তিরা এখন দেশে বিদেশে থেকে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এরাই তারা, যারা জাতিন পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ দেশে ভয়াবহ অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। তাদের চরিত্র নানান চেহারায় আমরা দেখতে পাই। আমরা আর পিছনে যেতে চাই না, আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। সকল ভুল ভ্রান্তি দূর করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। অতীতের জঞ্ঝাল পরিষ্কার করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা বিজয়ী জাতি, আমরা কোন অপশক্তির কাছে আমরা পরাজিত হবো না।
বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি যুদ্বাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
এদিকে মেলাকে সফল করতে মেলা মাঠের স্টল ও মঞ্চ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩০ বছরের মেলার পদার্পণে সুবিশাল পরিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মেলার কার্যক্রম। জেলা ও জেলার বাইরের প্রায় অর্ধশতাধিক সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন এবছর মেলা মঞ্চে দর্শক উপভোগ্য অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে।
মেলা মঞ্চে প্রতিদিন থাকছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোচিত ঘটনাবলীর স্মৃতিচারণ। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও মেলা মাঠে থাকছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে গড়া সুসজ্জিত স্মৃতিসংরক্ষণ ৭১ গ্যালারী। থাকছে বঙ্গবন্ধু ও মুিক্তযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক। এখানে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চাঁদপুরের বীর সেনানীদের সাথে পরিচিত হতে পারবে। এছাড়া মেলায় আগত শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য থাকছে নাগরদোলা, ট্রয়ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডস। বিজয় মেলা সফল করতে উপদেষ্টা কমিটি, স্টিয়ারিং কমিটি, উদযাপন পরিষদ, নাট্য পরিষদ, সাংস্কৃতিক পরিষদ, মিডিয়া পরিষদ ও প্রচার প্রকাশনা পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে।
বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের মহাসচিব জারুন আল রশিদের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান কিরন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মঈনুল হাসান, বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ইয়াকুব আলী মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাড. মজিবউর রহমান ভূইয়া, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইচ চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী প্রমুখ।