শরীফুল ইসলাম/সুজন পোদ্দার :
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় চাঁদপুরের ফায়ার ফাইটার এমরান হোসেন মজুমদার নিহত হয়েছে। এমরান কচুয়া উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের সিংআড্ডা গ্রামের মৃত মকবুল ক্বারীর ছেলে।
এদিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সকল ফায়ার ফাইটারকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হলে এমরানের মরদেহ এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পরিবারের লোকজন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম আখতার হোসাইন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত এমরান হোসেন ২০০১ সালে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে ফায়ার লিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভিতরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সাথে যান তিনি।
সেখানে রাসায়ানিক পদার্থ থাকায় বিস্ফোরনে এমরান হোসেন মুজমদার নিহত হন। নিহতের খবর শুনে তার গ্রামের বাড়ি কচুয়ার সিংআড্ডা গ্রামে কান্নার আহাজারি নামে। নিহত এমরান হোসেনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, ছেলে তাহসিন মজুমদার ও প্রতিবন্ধী মেয়ে তোবা মজুমদার রয়েছেন। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী ও সন্তানরা কাতর হয়ে আছেন।
নিহতের ভাই সোলমান পাটওয়ারী বলেন, শনিবার রাতে আমার ভাই এমরান মজুমদার বাড়িতে শেষ কথা বলেন। ভাইয়ের এমন মৃত্যু আমরা মানতে পারছি না। ভাইকে হারিয়ে শোকের কাতরে পরিনত হয়েছে পুরো পরিবার। নিহত ৭জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মধ্যে ২জনের মরদেহ সনাক্ত করা গেছে। বাকি ৫জনের মধ্যে আমার ভাইয়ের মরদেহ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
নিহতের স্বজন শাহিনুর আক্তার, সোলেমান পাটওয়ারী, শাহপরান ও সুমাইয়া আক্তার জানান, এমরান হোসেন মজুমদার একজন ভালো মানুষ ছিলেন। বর্তমানে তার স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। নিহত এমরানকে হারিয়ে এখন পরিবারটি নি:স্ব।
শনিবার রাতে তার স্ত্রীর সাথে শেষ কথা হয় তার। কিছুক্ষণ পরে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেলে চিন্তিত হন তার পরিবার। সকালে তার মৃত্যুর খবর শুনতে পান। তার লাশ সনাক্ত করে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।
এ বিষয়ে কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম আখতার হোসাইন বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় ঢাকায় চিকিৎসাধিন আছি। আমার প্যানেল চেয়ারম্যান প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর নিচ্ছে। নিহত এমরান হোসেনের মরদেহ এখনো শনাক্ত করতে পারেনি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, আমরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখছি। মরদেহ বাড়িতে আনার পর দাফন-কাফনে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।