জনমত জরিপ : চাঁদপুর পৌরসভার পরবর্তী মেয়র সাবেক ছাত্রনেতা!

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর পৌরসভার পরবর্তী মেয়র হতে যাচ্ছেন সাবেক একজন ছাত্রনেতা। পৌর নির্বাচন সামনে রেখে চাঁদপুর প্রবাহ পরিচালিত এক জনমত জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। জরিপের তথ্য মতে, মেয়র পদে এবার ৩জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক দুই প্রভাবশালী ছাত্রনেতার মধ্যে। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা আক্তার হোসেন মাঝি।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল দলের দুঃসময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের এই শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে চরম প্রতিকূলতা ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করতে হয়েছে তাকে। চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে তার সুসম্পর্ক ও সুপরিচিতি দীর্ঘদিনের। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম তার খালাতো ভাই। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আস্থাভাজন অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরেরও স্নেহধন্য তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে চাঁদপুরের রাজনীতি সরব তিনি। ব্যক্তিগত সদাচরণ ও মিষ্টভাষী এই ছাত্রনেতাকে এবারের পৌর নির্বাচনে সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আক্তার হোসেন মাঝি ছাত্রদলের সাবেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা। চাঁদপুর জেলার শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদে ছাত্রদলের প্রার্থী হিসেবে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কও ছিলেন দলের দুঃসময়ে। চাঁদপুর শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে আছেন তিনি দীর্ঘদিন ধরে। মূলত চাঁদপুর পৌর মেয়র হওয়ার বাসনায় দীর্ঘদিন ধরে শহর বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত তিনি। বর্তমানে জেলা বিএনপির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক তিনি। সদালাপী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পুরো শহরে তার পরিচিতি রয়েছে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন তিনি।

চাঁদপুর পৌর নির্বাচন উপলক্ষে পরিচালিত জরিপে জানা যায়, মেয়র পদে মূল লড়াই হবে অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েলের নৌকা ও আক্তার হোসেন মাঝির ধানের শীষের মধ্যে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকরা আশা করছেন, অ্যাড. জুয়েলের ব্যক্তিগত বিপুল জনপ্রিয়তা, সরলতা, সততা, গ্রহণযোগ্য ও আন্তরিকতা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আস্থাভাজন হওয়া, বিগত ১২ বছর ধরে চাঁদপুর পৌর এলাকায় সরকারিভাবে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হওয়া এবং সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে উন্নয়নের স্বার্থে পৌরবাসী তাকেই নির্বাচিত করবেন। নৌকার বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার বলেই তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা মনে করছেন, বিএনপির রিজার্ভ ভোট, সরকার দলের প্রতি নানা কারণে অসন্তুষ্ট ভোটার এবং দলনিরপেক্ষ ভোটাররা ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে তাদের রায় দিবেন। তাছাড়া আক্তার হোসেন মাঝি সর্বমহলে একজন গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় ব্যক্তি। পৌর মেয়র পদে দলের পরিবর্তনও চায় অনেক পৌরবাসী। সব মিলিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে দলটির মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে।

অবশ্য শহরের বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ ভোটারদের বক্তব্য হচ্ছে- সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অ্যাড. জুয়েল ও আক্তার মাঝির মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কারণ, চাঁদপুর পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের হার কাছাকাছি। তবে শহরের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও নির্বাচনী বাস্তবতা বিবেচনায় অ্যাড. জুয়েলকে এগিয়ে রাখছেন অধিকাংশজন। আবার ভোটের দিনের পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে এর ভিন্নতাও হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। তবে একটি বিষয় প্রায় শতভাগ নিশ্চিত- চাঁদপুর পৌরসভা পরবর্তী মেয়র হিসেবে একজন সাবেক ছাত্রনেতাকে পাচ্ছে!

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)