পানিতে নিমজ্জিত চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক

কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক আবারো জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। গত দু’দিন ধরে জোয়ারের সময় পানিতে ডুবে থাকে সড়কটি। পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এতে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে অনেক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই সড়কের পাশের বাসিন্দারা। সকাল ও বিকেলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে চাঁদপুরের বহুল আলোচিত ও ব্যস্ততম বাইপাস এই সড়কটি হাঁটু পানিতে ডুবে থাকে।

গত ১৮-১৯ দিন আগেও হঠাৎ করে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু সড়কসহ পুরো চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ও সড়কগুলো পানিতে ডুবে যায়। অবশ্য সেই পানি কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে নেমে যায়।

জানা যায়, গত দু’দিন ধরে আবার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর পানি বাড়ছে। প্রতিদিন জোয়ার হলেই এসব নদীর পানি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। দেশের অন্যান্য জেলা, অঞ্চলে বন্যা দেখা দিলেও চাঁদপুরে এখনো বন্যার তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে গত দু’দিনে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই বন্যার আশংকা করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ওই সড়কের মিশন রোড থেকে শুরু করে হাজী বাড়ি মোহাম্মদীয়া জামে মসজিদ হয়ে দর্জিঘাট পর্যন্ত হাঁটু পরিমান এই জোয়ারের পানি সড়কে বইতে থাকে।

এছাড়া সড়কের মিশন রোড হতে শুরু করে ওয়্যারলেস সড়ক পর্যন্ত সড়কের দক্ষিণ পাশে অর্থাৎ লেকের অংশজুড়ে সড়কটির অনেকাংশে জোয়ারের পানি উঠতে দেখা যায়।

ভাটা হলে সড়কের ওপর থেকে পানি নেমে গেলেও পানি থাকা অবস্থায় ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়। যার কারণে ওই সড়ক দিয়ে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

চাঁদপুর পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বিষ্ণুদী এলাকার মিশন রোডস্থ বঙ্গবন্ধু সড়কে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দিনের টানা বৃষ্টির পানি এবং জোয়ারের পানি ওই এলাকায় বন্যার পানির মতো বিশাল জায়গা জুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানি জমে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে থাকা লেক এক হয়ে যায়। বিশেষ করে হাজী বাড়ি মসজিদ হতে খান বাড়ি পর্যন্ত সড়কের ওপর হাঁটু পরিমান পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এতে বুঝা যায়নি কোনটি সড়ক আর কোনটি লেক।

এ সময় অনেক যানবাহন সেখান দিয়ে ধীর গতিতে যানবাহন চালিয়ে যেতে দেখা যায়। একই সাথে অনেক পথচারী পানির কারনে জুতা হাতে নিয়ে কেউবা আবার বিকল্প পথ বেছে নিয়ে রেললাইন দিয়ে হেটে যেতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, এই সড়কটি প্রায় বছর খানেক আগে পুনঃসংস্কার করা হয়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কর্ভাট ভ্যান, মাইক্রোবাস,সিএনজি স্কুটার, রিক্সা অটোবাইক সহ বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে থাকে।

এজন্য ভারী যানবাহন চলাচল করার কারনে সড়কটি খুব অল্প সময়ে আবার বেহাল দশায় পরিণত হয়। স্থানীয়রা মনে করছেন, এভাবে যদি প্রতিনিয়ত এমন একটি ব্যস্ততম সড়কে জোয়ারের পানি বইতে থাকে তাহলে ভারী যানবহনে চলাচলে সড়কটির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

এমন অবস্থায় সড়কটি ক্ষয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে স্থানীয়রা যে কোন মুহূর্তে ওই সড়ক দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। তাই জোয়ারের পানি থাকাবস্থায় কর্তৃপক্ষ যানবাহন চলাচল রোধ করে সড়কটি রক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)