ফেইসবুকে নারীর ছবি দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : মসজিদে মুসল্লির উপর হামলা

জহিরুল ইসলাম জয় :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ফেইসবুকে নারীর ছবি আপলোড দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় তারাবির নামাজ চলা অবস্থায় মসজিদে হামলা করে দুই মুসল্লিকে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘটনাটি ঘটে রোববার রাতে পৌর এলাকার আলীগঞ্জে। আলীগঞ্জের মা জেনারেল হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসার আলেয়া বেগমের (৩৫) ছবি ফেইসবুকে দেয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আলীগঞ্জে স্থানীয় মঞ্জুরুল আলম, শাহ্পরান ও মাসুদের ইন্ধনে দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তারাবি নামাজ চলা অবস্থায় মসজিদে হামলা করে দুই মুসল্লিকে কুপিয়ে মারত্মকভাবে আহত করেছে স্থানীয় কিছু কিশোর।

গত ১৬ এপ্রিল শুক্রবার আলীগঞ্জ মা জেনারেল হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসার আলেয়া বেগম হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে হাসপাতালের ভেতরের ঔষধ ব্যবসায়ী মাসুদ তার ছবি তুলে “হাসপাতালের দালাল” উল্লেখ করে তার ফেইসবুকে ওই নারীর ছবি আপলোড করে। এ নিয়ে ১৭ এপ্রিল শনিবার পৌরসভার প্যানেল মেয়র আজাদ ও কাউন্সিলর কাজী মনির, কাউন্সিলর হাজী কাজী কবির হোসেন বিষয়টি সমাধান করে দেন।

কিন্তু সেই ঘটনার সূত্রপাত করে মাসুদ, মঞ্জু ও শাহপরানের ইন্ধনে স্থানীয় টোরাগড় গ্রামের শতাধিক কিশোর যুবক রাত সাড়ে ৮টায় এশার নামাজ শুরু হলে বেলাল হাফসি মসজিদে প্রথমে হামলা করে মসজিদের গ্লাস ভাংচুর করে নামাজরত মুসল্লিদের উপর হামলা করে। আলীগঞ্জ মাদ্দাখাঁহ মসজিদ গেইটে এসে বিভিন্ন দোকানে হামলা ভাংচুর শুরু করে। পরে আলীগঞ্জের যুবকরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফেজ মোস্তাফা কামাল জানান, মঞ্জুরুল আলম, শাহপরান ও মাসুদ তারা হেফাজত নেতা। তারা বিভিন্ন সময় হেফাজত নামক সংগঠনকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে আসছে। মামুনুল হক আটক হওয়ার পর থেকে এলাকায় তাদের আনাগোনা বেড়ে গেছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদ হোসেন জানান, এটা এভাবে ছেড়ে দেয়া যায় না। একটি মীমাংসিত বিষয় নিয়ে হেফাজত নেতা মঞ্জু ও শাহপরানের ইন্ধনে কিশোরদের টাকা-পয়সা দিয়ে মসজিদ ও মানুষের বাড়ি-ঘর, দোকানপাটে অতর্কিত হামলা করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ জঙ্গী স্টাইল।

খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার এসআই মোশারফ ও এসআই জয়নাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও উভয়পক্ষের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এ সময় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ির জট সৃষ্টি হয়।

পরে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে উভয়পক্ষেকে সরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের সাথে উপস্থিত হয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আজাদ হোসেন, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মো. মনির, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মো. কবির হোসেন কাজী সড়ক থেকে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)