মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী আর নেই। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি ব্রেন টিউমারসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ৩০ আগস্ট দুপুরে তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা শেষে তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা-মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে সে রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করে। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন তিনি।

১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করা আবু ওসমান চৌধুরী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন।

১৯৬০ সালে কুমিল্লার মৌলভী পাড়ার মনসুর আহম্মেদের বড় মেয়ে নাজিয়া খানমের সঙ্গে আবু ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিমা ওসমান ও ফাওজিয়া ওসমান তাদের দুই মেয়ে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবু ওসমান চৌধুরীকে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়, বঙ্গবন্ধু তাকে আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) পরিচালকের দায়িত্ব দেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের সময় একদল সেনসদস্য আবু ওসমান চৌধুরীকে হত্যার জন্য তার গুলশানের বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে না থাকায় তিনি সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন তার স্ত্রী নাজিয়া খানম।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবু ওসমান চৌধুরীকে বিজেএমসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)