মেঘনায় জাটকা নিধন : বহিরাগত জেলেদের দায়ী করছেন স্থানীয়রা

বিশেষ প্রতিনিধি :
চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনায় ব্যাপক হারে জাটকা নিধন চলছে। স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, বহিরাগত জেলেরা মাছ ধরছে বেশি। উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির অভিযান অব্যাহত থাকা সত্তে¡ও নিধন চলছে জাতীয় সম্পদ ইলিশ। একদিকে উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির অভিযান অপরদিকে প্রকাশ্যে জাটকা নিধন করছে জেলেরা। বহিরাগত জেলেরা বহর নিয়ে এসে হাইমচরের গাজীপুরে মেঘনায় জাল পেলে জাটকা নিধন করতে দেখা যাচ্ছে। জাটকা রক্ষা অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় জেলে ও সাধারণ মানুষের মাঝে।

জানা যায়, গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীর টেকে মতলব উত্তর, মোহনপুর, চাঁদপুর সদর ও বহরিয়া এলাকার জেলেরা প্রতিদিন বিকেল থেকেই নদীতে জাল পেলে জাটকা শিকার করে থাকে। তাদের ট্রলারে ইট, পাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রস্ত্র নিয়ে তারা প্রভাব খাটিয়ে নদীতে জাল পেলে। প্রশাসনের টিম, কোস্টগার্ড ও নীলকমল নৌ-পুলিশসহ কোন টিমই তাদের ধাওয়া করার সাহস করে উঠতে পারে নি। নদীতে অভিযান চলাকালীন সময়েও এ জেলেরা জাটকা নিধন করে। এই জেলেদের বহর দেখে অন্যদিকে চলে যায় অভিযানে টিম এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক।

অভিযানের টিমের সাথের প্রশাসনিক এক কর্মকর্তা জানান, বহিরাগত এ জেলে গুলো চাঁদপুর মহনা দিয়ে বহর নিয়ে হাইমচরের মেঘনায় এসে মাছ শিকার করে। চাঁদপুরের প্রশাসন চাইলে এ সকল বহিরাগত জেলেদের নিয়ন্ত্রন করতে পারে। তাদেরকে যদি চাঁদপুরের মহনায় কড়া পাহাড়া দিয়ে আটকে দেয়া যায় তাহলে তারা হাইমচরের ডুকতেও পারবে না, মাছ শিকার করতে পারবে না। হাইমচরের মেঘনায় জাটকা রক্ষা করতে হলে বহিরাগত জেলেদের নিয়ন্ত্রন করতে হবে। তাদের একমাত্র চাঁদপুর প্রশাসনই পারে নিয়ন্ত্রন করতে। হাইমচরের মেঘনায় তারা বহর নিয়ে মাছ নিধন করে। অভিযানের টিমের সদস্য কম থাকায় তাদের ধাওয়া করা সম্ভব হয়নি। অভিযানের টিম দেখলে তারা ভয়ে পালাবার কথা, কিন্তু উল্টো এ জেলেরা লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে অভিযানে টিমকে ধাওয়া করে।

নাম প্রকাশ না করা সত্যে গাজিপুর ইউনিয়নের কয়েকজন জেলে বলেন, হাইমচরের কোস্টগার্ড নৌ-পুলিশ নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করেন। নদীতে তাদের সামনে মাছ নিধন করে নিয়ে যাচ্ছে বহিরাগত জেলেরা। তারা দেখেও যেন না দেখার মত করে চলে যান। অভিযান শুধু মনে হচ্ছে আমাদের জন্য। আমরা নদীর পাড়ে বসে বসে দেখি আর শুধু আপসোস করি। আমাদের চোঁখের সামনে দিয়ে নদী থেকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। এই জেলেদের নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে মেঘনায় ইলিশ রক্ষা করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তারা।

অভিযান চলছে, জাটকাও নিধন হচ্ছে সমানতালে এই বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধে আমরা অভিযান পরিচালনা করে আসছি, দলবেধে জাটকা নিধন বন্ধে সমন্বিত অভিযান করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরী বলেন হাইমচর প্রশাসন, কোস্টগার্ড, মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে অভিযান চলছে, গত সোমবারের অভিযানে আটক ১১জনের মধ্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৫জনকে জরিমানা, ৬জনকে জেল দেয়া হয়েছে, জাটকা নিধনে জড়িত বহিরাগত জেলেদের নিয়ন্ত্রণে গাজীপুর ও ঈশানবালা মধ্যবর্তী একটেল টেক এলাকায় কোস্টগার্ড অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে অভিযান পরিচালনা করলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে, সে বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চলছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)