চাঁদপুরে করোনার আবাদস্থল ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান!

শাওন পাটওয়ারী :
কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের আগ্রাসনে নাস্তানাবুদ সারাবিশ্ব। দিনের পর দিন হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, সাথে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরন ও স্বাস্থ্যবিধি মানার গুরুত্বারোপ করে খুলে দেওয়া হয়েছে লকডাউন।

তবে চাঁদপুরে জনজীবনে কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি। চাঁদপুরে করোনার আবাদস্থল এখন ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকানগুলো। করোনা প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে মানুষের নজর এখন ফলের দোকানগুলোতে। এছাড়া মৌসুমী ফলে বাজার গুলো এখন সয়লাভ। সব মিলিয়ে ফলের দোকানগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।

শহরের স্থায়ী ফলের দোকানগুলোতে কিছুটা সামাজিক দূরত্ব মানা হলেও ফুটপাতের ভ্রাম্যমান ফলের দোকানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি ছিটেফোঁটাও মানা হচ্ছে না। শহরের কালীবাড়ি রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে প্রবেশমুখে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে ফলের ব্যবসা করে আসছেন কিছু ভ্রাম্যমান ফল ব্যবসায়ী। একাধিকবার চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ এ ব্যাপারে অভিযান চালিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হলেও অজানা খুঁটির জোরে বরাবরই তারা এখানে থাকে বহাল তবিয়তে।

প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করে শপথ চত্বর এলাকা দিয়ে। যাতায়াতের পথে সখের বসত অনেকেই ফল কিনেন এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে। দাম যাচাই বাছাইয়ে ফলে এক ফল একাধিক লোকের হাতে ঘোরাফেরা করে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় শতভাগ।

এছাড়া ৪০ টাকা মূল্যের ফল এখানে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। ওজনে ও সংখ্যায় কম দেওয়া তো আছেই। এক ভুক্তভোগী মহিলা জানায়, ৫০টি লিচু ভ্যাগে ভরে দিয়ে ১শ’ লিচুর টাকা নিয়েছে এক ফল ব্যবসায়ী।
প্লাটফর্মের এক দোকানী জানায়, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি তাদের উচ্ছেদ করার জন্য। তাদের ফলের ঝুড়ির কারণে প্রবেশদ্বার দিয়ে রেলস্টেশনে মানুষ প্রবেশ করতে পারছে না। রেলওয়ে পুলিশ প্রায় সময় অভিযান দিলেও অদৃশ্য কারণে তাদের উচ্ছেদ না করেই তাদের চলে যেতে দেখা যায়।

গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, চাঁদপুর কালীবড়ি রেলস্টেশনের টিকেট কালেক্টর রুম ভাড়া দেয়া হয়েছে ফলের গোডাউন হিসেবে। প্রতিদিন বেচাকেনা শেষে এসব ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ীরা ফলগুলো এই গোডাউনে রেখে দেয়।

চাঁদপুর কালীবাড়ি রেলস্টেশনের বুকিং এসিসট্যান্ট আবু কাউছার জানান, ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করতে এই পর্যন্ত চাঁদপুর রেলওয়ে পুলিশকে তিনবার চিঠি দিয়েছি। এসব ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ীদের কারণে রেলের কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। রেলওয়ে পুলিশের সাথে কথা বলে অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। টিকেট কালেক্টর রুমে কোন ফলের গোডাউন ভাড়া দেয়া হয়নি। এ অভিযোগটি সত্য নয়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন