কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পৌর মার্কেট ভবনটির বিভিন্ন স্থানে অনেক ফাঁটল দেখা দিয়েছে। তাই এই ভবনটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণভাবে রয়েছে। আর এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ভেতরই প্রতিদিন নিয়মিত পরিচালিত হয়ে আসছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।
জানা যায়, পাকিস্তান আমলে এই ভবনটি এখানে নির্মিত হয়েছে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ভবনটির কোন প্রকার পুনঃসংস্কার কাজ করা হয়নি। এ জন্য এই ভবনটির মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। যে কোন ভবনেরই মেয়াদ পেরিয়ে গেলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। অথচ চাঁদপুর পৌরসভার দায়িত্বে থাকা এই পৌর মার্কেট ভবনটির মেয়াদ না থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই মার্কেটের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পার্শে যে ভবনটি রয়েছে, সেটি সেই মান্ধাতা আমলের একটি পুরনো ভবন এবং সেটি অনেকটা জরাজীর্ণভাবে রয়েছে। ভবনটির বাইরের অংশে থাকা বেশ কয়েকটি পিলার এবং ভিমের আস্তর, ঢালাই খসে পড়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে সিলিংয়ের বিশাল, বিশাল জায়গাজুড়েও আস্তর এবং পাকা ঢালাই খসে পড়ে বেশির ভাগই রড দেখা যাচ্ছে।
অনেকাংশে ছোট-বড় ফাঁটলও দেখা গেছে। তাই যে কোনো মুহূর্তেই ভবনটি ভেঙ্গে পড়ে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। মার্কেট ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে প্রতিদিন এই মার্কেটে থাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুরের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করলে তারা ভবনটির বাস্তব চিত্র দেখে বলেন, ভবনটির যে হাল, এতে তা অবশ্যই একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। ভবনটির বিভিন্ন পিলার, ভিম এবং সিলিংয়ের আস্তর খসে পড়ে রড দেখা যাচ্ছে। এতে করে যে কোন সময়ই ভবনটি ধসে পড়ে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভবনটির বাস্তব চিত্র দেখে সেটি যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই।
খবর নিয়ে জানা গেছে, এই মার্কেটে বেশ কয়েকটি স্টেশনারী, খাবার হোটেল, আবাসিক, হোটেল, আঞ্জুমানে খাদেমুল ইনসানের অফিসসহ বেশ ক’টি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রতিদিন সেখানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তাই এই পৌর মার্কেট ভবনটির খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ভেঙ্গে নতুন ভবন তৈরির প্রয়োজন মনে করছেন চাঁদপুরের সচেতন মহল। নইলে বাংলাদেশের আলোচিত ঘটনা রানা প্লাজার মতো এটিও যে কোন সময় ধসে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ এইচ এম শামসুদ্দোহার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরাও জানি যে এই মার্কেটরে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য এই ভবনটি ভেঙ্গে এখানে নতুন করে মার্কেটের ভবন নির্মাণের জন্য তিন বছর আগেই আমরা ইউএনসিডিএফের প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়াও যাতে করে রাজস্ব আয় হয় সেজন্য চাঁদপুর শহরের বিপনীবাগ বাজারে দুটি এবং বাসস্ট্যান্ডে একটি মার্কেটসহ মোট তিনটি মার্কেটের ভবন নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর সে প্রস্তাব পাশ হলেই এই পুরাতন ভনটি ভেঙ্গে নতুন করে ১০তলা ভবন নির্মাণ করা হবে।