চাঁদপুরে কোরবানীর সাড়ে ৩৬ হাজার পশু নিয়ে শঙ্কিত আড়াই হাজার খামারী

শরীফুল ইসলাম :
কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে চাঁদপুরে সাড়ে ৩৬ হাজার গরু-ছাগল মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত প্রায় আড়াই হাজার খামারী। কিন্তু করোনায় পাল্টে দিয়েছে সকল হিসাব। তাই তো কাঙ্খিত দাম পাওয়া ও পশু বিক্রি নিয়েই আশঙ্কায় রয়েছেন ওইসব খামারী। সম্মিলিতভাবে খামারীরা কোটি কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

অপরদিকে এক শ্রেণির মৌসুমী ব্যবসায়ী ঈদ সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে বড়ি (ট্যাবলেট) ব্যবহার করে থাকে। তারা রোগাক্রান্ত কিংবা কম ওজনের গরু, ছাগল, মহিষ অতি অল্প সময়ে স্বাস্থ্যবান করে তুলতে ‘পাম’ বড়ি খাওয়াচ্ছে। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ নিয়েও উদ্বিগ্ন রয়েছে চাঁদপুরবাসী।

তবে প্রাণীসম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমরা প্রতিনিয়ত নজর রাখছি। এরপরও কোরবানী উপলক্ষে গরুর হাটগুলোতেও আমাদের নজর থাকবে। এ ধরনের কিছু নজরে আসলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।

চাঁদপুর জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮ উপজেলায় ২ হাজার ৪১৯জন খামারী রয়েছে। যাদের অনেকেই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর চাঁদপুর থেকে প্রশিক্ষিত। আবার অনেকেই এলাকার খামারীদের অনুসরণ করছেন। ওইসব খামারী এ বছর ৩৬ হাজার ৪৮৭টি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করছেন। এসব পশুর মধ্যে দুধের গাভী ছাড়া বাকী পশু কোরবানীর হাটে বিক্রি করা হবে।

এ ব্যাপারে কথা হয় হাজীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব হাটিলা গ্রামের মির্জা ডেইরী ফার্মের মালিক জলিলুর রহমান দুলাল মির্জার সাথে। তিনি বলেন, যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ২০০৭ সালে মাত্র একটি গাভী নিয়ে ডেইরি ফার্মের যাত্রা শুরু করি। বর্তমানে তার ডেইরী ফার্মে প্রায় ১০০টি গাভী ও ষাড় রয়েছে।

প্রতি বছর কোরবানি এলে এই ফার্মের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬০ টি গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করি। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে আর্থিক দূরাবস্থায় অনেকেই কোরবানী দিবে না বলে মনে হচ্ছে। তাই গরু বিক্রি ও দাম নিয়ে চিন্তিত আছি। যদি তাই হয়, তবে এ বছর অনেক টাকা লোকসান গুণতে হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জুলফিকার আলী জানান, এ উপজেলায় প্রায় ২শ’ খামারী গরু ও ছাগল মোটাতাজা করছেন। আমরা সার্বক্ষণিক খামারীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। এরপরও করোনার কারণে তারা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, এ বছর চাঁদপুরের খামারীরা প্রাকৃতিক ঘাস, খড়, খৈল ও ভুষি খাওয়ানোর মাধ্যমে পশুগুলো মোটাতাজা করছেন। যা জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় লোকজন প্রতিনিয়ত তদারকি করছেন। তবে আমি মনে করি তাদের শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ দেশী গরুর চাহিদা সব সময়ই থাকে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)