চাঁদপুরে গ্রাহকদের বীমার টাকা দিচ্ছে না পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স

শরীফুল ইসলাম :
ভবিষ্যত অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পেয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের চাপাতলী গ্রামের বাসিন্দা নাছির মিয়া (৫৮) পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে তিনটি বীমা পলিসি করেন। বীমা পলিসিটির মেয়াদ পূর্ণ হয় ২০১৮ সালে। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও বীমা দাবির টাকা এখনো পাননি নাছির মিয়া। বীমা দাবির টাকা পেতে প্রতিষ্ঠানটিতে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েও লাভ হচ্ছে না। বীমাকৃত অর্থ পরিশোধে নানা টালবাহানা করছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর চাঁদপুরস্থ কর্তৃপক্ষ। কেবল তিনি’ই নয়, তার মতো শত শত গ্রাহক এখন চরম অনিশ্চয়তা দিশেহারা।

নাছির মিয়া বলেন, মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ দ্বিগুণ টাকা পাওয়া যাবে- বীমা করার সময় এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মুনাফা তো দূরের কথা, এখন আসল টাকাও ফেরত দেয়া হচ্ছে না। কোম্পানিতে বীমা দাবির টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। কষ্টের সংসার। তারপরও নিয়মিত বীমার প্রিমিয়ামের টাকা জমা দিয়েছি। পলিসির মেয়াদ শেষে বীমা দাবির টাকা চাইলে কোম্পানির প্রতিনিধিরা সব কাগজপত্র নিয়ে নেয়। কিন্তু মাস গড়িয়ে একে একে দু’বছর চলে গেলেও বীমা দাবির টাকা দিচ্ছে না।

ভুক্তভোগী এই বীমা গ্রাহক বলেন, আমার পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে তিনটি বিমা। একটিতে ৫৩ হাজার, আরেকটিতে ৬৫ হাজার ও অন্যটিতে ৫ লক্ষ ৮শ’ ৫০ টাকা রয়েছে। তিনটি মিলে মোট ৬ লক্ষ ৮ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকা তাদের কাছ থেকে। এসব বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। এখনো টাকা পেলাম না। অনেক আশা নিয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুইরেন্সে বীমা করেছিলাম। বীমা করার সময় কোম্পানির লোক ভালো ভালো কথা বলে। এখন বীমার টাকা চাইতে গেলে কেউ কোনো কথা বলতে চায় না। কোথায় গেলে বীমার টাকা পাওয়া যাবে তা বুঝতে পারছি না। উল্টো টাকা দেওয়ার কথা বলে বকেয়ার নাম করে আমার কাছে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরো ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে তারা।

এদিকে চাঁদপুর জেলা শাখার পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড অফিসে প্রতিদিন শত শত মানুষ বীমা পলিসিটির টাকা নিতে অফিসে আসেন। অনেকেই অফিসে এসে দায়িত্বরত কাউকে না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অফিসের কর্মকর্তারাও নিয়মিত অফিস করেন না। ইনচার্জ মো. আরিফ হোসেনকে অফিসে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ প্রতিনিধিও গত রোববার অফিসে গিয়ে তাকে পায়নি।

চাঁদপুরস্থ পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর লিমিটেডের শাখা ইনচার্জ মো. আরিফ মোবাইল ফোনে চাঁদপুর প্রবাহকে বলেন, করোনার পর থেকে কেন্দ্রীয় অফিস অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে না। এ কারণে চাঁদপুরের অনেক গ্রাহক টাকা পাচ্ছে না। গ্রাহকরা যাতে বীমা দাবির টাকা পায় সে জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে কোম্পানি গ্রাহকের বীমা দাবির টাকা দিতে বাধ্য। ভুক্তভোগী গ্রাহক নাছির মিয়া কবে নাগাদ টাকা পাবেন- এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)