ঝুঁকির মুখে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের সাড়ে ৩ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ

চাঁদপুর শহর রক্ষায় ৩ হাজার কোটি টাকার স্থায়ী প্রকল্প প্রস্তাব পেশ

আবদুর রহিম বেপারী :

সম্পূর্ণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মোলহেডসহ চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধ। এ বাঁধের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার (৩৩৬০ মিটার) এলাকাই ঝুকিপূর্ণ বলে জানান সংশ্লিষ্ট  প্রকৌশলী। জেলা শহরটি দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশ পুরানবাজার, যেখানে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় দেড় কিলোমিটার, আরেক অংশ নতুনবাজার, যেখানে রয়েছে মোলহেডসহ (শহরের ঠোটা) বাঁধের ২ কিলোমিটার। জেলা শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনার শাখা নদী ডাকাতিয়া, যা আঁকাবাঁকা হয়ে প্রবাহিত হয়ে যুগযুগ ধরে দু ’কুলের গঞ্জের বাজারগুলোকে ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ করে মিশে গেছে কুমিল্লায়।

সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানালেন, শহর রক্ষার স্থায়ী বাঁধের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পেশ/প্রস্তাব করা হয়েছে সরকারের কাছে। গত ৪ মার্চ তা সংশ্লিষ্ট  মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই করা হয় । এরপর আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে একনেকে পাশ হলে স্থায়ীভাবে শহর রক্ষার বাঁধের কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়।

প্রকৌশলীরা আরও জানান, এই বাঁধের সবটাই ভালনারেবল, তাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পুরো বাঁধ এলাকা। শহররক্ষা বাঁধের  ৩৩৬০ মিটারের  মধ্যে পুরানবাজার অংশে ১৪৩০ মিটারে রয়েছে হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘর। বাকিটুকু জেলা শহরের নতুনবাজার অংশে ।

বাঁধ ঘুরে দেখা গেল,  এরই মধ্যে বর্ষা আরম্ভ হবার আগেই বাঁধের বিভিন্ন স্থানে মেঘনার বুকে তলিয়ে যাচ্ছে বালিভর্তি জিইও ব্যাগ ও ব্লক। মেঘনাপাড় ও আশপাশের বিশাল এলাকার হাজার হাজার পরিবারের লোকজন আতংকে দিন রাত কাটাচ্ছে । তাঁদের একটাই দাবি, মেঘনার করাল গ্রাস থেকে স্থায়ীভাবে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হোক । গতবার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করা হলেও তার এখনো খবর হয়নি।

তবে সহসা স্থায়ীভাবে বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে না । এমনটাই জানা গেল সংশ্লিষ্ট চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড দফতর থেকে। এ নিয়ে জেলা শহরের নতুনবাজার ও  পুরানবাজারবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে মহাআতংক। জানালেন মেঘনার ভাঙনে ২/৩ বার ভিটেমাটি হারানো অসহায় নদীরপাড়ে আশ্রয় নেয়া আতংকিত উপকূলবাসীরা।

এ ব্যাপারে মেঘনার ভাঙনে গৃহহারা বাঁধের পাড়ে আশ্রিত ও আতংকিত লোকজন শহররক্ষা বাঁধটির প্রয়োজনীয় কার্যক্রম যাতে দ্রুত ও স্থায়ীভাবে শুরু করা হয় সেজন্যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত শহরের পুরানবাজারের বাণিজ্যিক স্থানসমূহের, হরিসভা ও পশ্চিম শ্রীরামদী গ্রামের অধিকাংশ এলাকায়ই মেঘনার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেমাটি হারা পরিবারগুলি আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। গৃহহারা নদীভাঙা অনেকে নদীর পাড়ে শহররক্ষা বাঁধের কিনারে মাথা গুজে আছেন।
নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী হারিয়েছেন তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা। বসবাসরত মানুষজন হারিয়েছে তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি।
ফিবছর নদীভাংগা গৃহহারা পরিবার/লোকদের সংখ্যা ঠিক কতজন কোন জরিপ কাজ আজ পর্যন্ত হয়নি। কোথাও এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।

গত ৪৮ বছর ধরেই ভাঙছে মেঘনা। ছোট হচ্ছে পুরানবাজার ও আশপাশ এলাকা। ২০১৯ সালে ১৫০ মিটার এলাকা বিলীন ও ২০২০ সালে ৩ আগস্ট ও ১৩ অক্টেবর পুরানবাজার হরিসভা রোডস্থ শহর রক্ষাবাঁধে পরপর ২ বার  মেঘনার ভাঙ্গন দেখা দেখা দেয় । ৩টি স্থানে ১০০ মিটার পযর্ন্ত ভাংগন ও ফাটল দেখা দিলে বাঁধ জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করা হয়।সে সময়  কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেঘনায় বিলীন হয়  তাদের ২০টি বসতবাড়িসহ ভিটেমাটি। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে আবার ভাঙন দেখা দেয় শহর রক্ষা বাঁধের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায়।
ভাঙ্গনকবলিত  ও আশপাশ  এলাকার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক।

গতবছর পুরানবাজার ভাঙন কবলিত শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীম। ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর চাঁদপুর শহরস্থ হরিসভা এলাকায় প্রমত্তা মেঘনার ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেছিলেন, চাঁদপুর শহর রক্ষায় সকল প্রকার ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। আপনারা হতাশ হবেন না। শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষায় যা যা করণীয় তা করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তিনি আরও জানান, ৪২০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে স্থায়ী বাঁধ নির্মাানের জন্য। আমার সাথে আছেন ডা. দীপু মনি এমপি । আমরা ভাই-বোন মিলে কাজ করছি। আছে কেন্দ্রীয় নেতা সুজিত রায় নন্দীও।

সেই সময়ে ভাঙনের নির্মম পরিস্থিতি দেখার জন্যে ছুটে আসেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপিসহ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ।

ভাঙন কবলিত অসংখ্য লোকজনের আহাজারি, ২/৩ বার, এমনকি ৪ বার বাড়ি-ঘর, গাছপালা, চাষের জমি পুকুর  নদীতে চলে গিয়ে এখন সবর্হারা, নীড়হারা, ঠিকানা ছাড়া। নদীর পাড়েই ভাঙ্গা ঘরেই  মাথা গুজে বসবাস। সারা রাত কাটে আতংকে। কখন যে তলিয়ে যায় বাঁধ ও ঘরবাড়ি। এমনটাই জানান পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকার কুলসুমা বেগম (৩৮), মরন ঢালী (৭০) ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), তাহমিনা বেগম (৫০), রাশেদা রাব্বানী, সুমন ও লিটন কাজী (৪০)।

তারা জানান, বাতাসের কারণে পানি বাড়ছে, ঢেউও উঠছে নদীতে। তলিয়ে যাচ্ছে রক্ষাবাঁধের পাথর ও বালিভর্তি ব্যাগ। আমাদের আতংকও বাড়ছে। দ্রুত স্থায়ীভাবে  বাঁধের কাজ শেষ করে মেঘনার অব্যাহত ভাঙন থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি। তারা সবাই জানান, আমাদের বাড়ি-ঘর সবই নদীর পেটে।

নদীর পাড় থেকে  অনেক পশ্চিমে আমাদের বাড়ি-ঘর ছিলো হাত দিয়ে দেখান বৃদ্ধ অসুস্থ মরন ঢালী। তিনি জানান, ৪ বার নদী গৃহহারা করেছে । পশ্চিম শ্রীরামদীতে এখন ছোট্ট ঘরে অন্যের জমিতে মাথা গুজে আছি । ঘরে পানি পড়ে, ঘুমাতে পারিনা। উঠে যাবার জন্য মালিক চাপ দিচ্ছে । বুড়া মানুষ রোগাক্রান্ত। কাজ করতে পারি না। একমাত্র ছেলেটার মাথা নষ্ট, কাজ করতে পারে না। হরিসভা এলাকার বাসিন্দা সুখরঞ্জন  নন্দী (৬০) ও তার স্ত্রী কামনা নন্দী (৫৫), বৃদ্ধা মালতী দাশ (৬০), বিশ্বকা নন্দী (৬০), কবরস্থান রোডের বাসিন্দা ফরিদা বেগম (৫০) ও তার স্বামী ওয়াহেদুর রহমানসহ আরো অনেকে একই কথা জানান। তারা বলেন, নদীভাঙার কারণে গত ৪৮ বছর  ধরে সরতে সরতে আজ নদীর পাড়েই মাথাগুজে দিনরাত কাটাই।

বাড়িঘর ছিলো নদীর ওই মধ্যখানে, হাত দিয়ে দেখালেন ফরিদা ও সুখরঞ্জন স্ত্রীসহ  আরও কয়েকজন। নদীর পাড়ে বাঁধের পাশে  বরশি  দিয়ে  কোষা নৌকায় মাছ শিকারী মকবুল শেখ (৫৫) জানান, তার এখানে নদীর পানির গভীরতা ৪৫ হাত । মানে ৭০ ফিট । তিনি ২৫ বছর ধরে  হরিসভার কাছেই মাছ ধরেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  হরিসভা এলাকা, প্রাক্তন কমিশনার নুরু বকাউল গংদের বাড়ির আশপাশে  ও পশ্চিম শ্রীরামদী এলাকার অনেক স্থানে বর্ষা মৌসুমে   ঢেউয়ের আঘাতে  বাঁধের  বালিভর্তি জিইও টেক্সটাইল ব্যাগ ও কংক্রিট সিমেন্ট ব্লক মেঘনায় তলিয়ে যাচ্ছে । পশ্চিম শ্রীরামদী, হরিসভা রোড ও আশপাশ এলাকায় ঘনজনবসতি ছাড়াও  রয়েছে  অনেক মসজিদও মাদ্রাসাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও মন্দির।

নিজ অফিসে একান্ত আলাপে চাঁদপুর  পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শফিকুর রহমান জানান, চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধের পুরো ৩৩৬০ মিটার অর্থাৎ  প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার (চাঁদপুর মাদ্রাসারোড লঞ্চঘাট থেকে পুরানবাজারের রণাগোয়াল পর্যন্ত) এলাকার সবটাই ভালনারেবল। বাঁধের ইমারজেন্সী/জরুরী কাজ করার জন্য, বাঁধ মজবুত, দৃঢ়করনের জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। টেন্ডারও হয়েছে। যেখানে যখনই ভাংগন দেখা দিবে তাৎক্ষণিক জিইও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলা হবে। আমরা সদা প্রস্তুত আছি ।

তিনি জানান, ১৯৭৩ সাল থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন সময়ে বাঁধ রক্ষায়, মজবুতি করণে ও মেরামতের ইমারজেন্সী  কাজের জন্য সরকারের  এ যাবত প্রায় ১৮০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার (৫/৩/২০২১) নদীর গতি প্রকৃতি ও বাঁধের অবস্থা দেখতে এসেছেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম।

সম্প্রতি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ৯ সদস্যের পানি/নদী বিশেষঞ্জ টীম নদীর গতিপ্রকৃতি, গভীরতা, পানির স্রোতধারা, ভাঙনের প্রকৃতি, জেগে উঠা বিশালকায় বালুচর, ডুবন্ত চর, ইত্যাদি নিবীড় স্টাডি করে দেখেছে । এ টিমের নেতৃত্ব দেন পানি/নদী বিশেষঞ্জ  মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন (সিজিআইএস)। সাথে ছিলেন বুয়েটের প্রকৌশলী  মো. আতাউর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা।

তাদের সিদ্ধান্ত মতে, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পশ্চিমে মেঘনার বুকে এখানে সেখানে মিনি কক্সবাজারসহ দীর্ঘ ওপ্রশস্ত বালু চর ও অনেক ডুবন্ত বালুচর জেগে উঠায়  মেঘনা নদী চাঁদপুরের ঠোটার কাছে এর প্রশস্ততা কমে চিকন/সংকীর্ন) হয়ে গেছে (গুগল  ম্যাপে ছবি)। যার ফলে মোলহেডই মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। বন্যার সময় বঙ্গোপসাগরে ডাউনস্ট্রিমে নেমে যাবার সময় উজানের পানির স্রোত ঢেউসহ পূর্ব তীরে এসে প্রচন্ডভাবে আঘাত করে, সৃষ্টি হয় মারাত্মক ঘুর্ণিস্রোত আর শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন।

শহরকে রক্ষার জন্য মেঘনাকে প্রশস্ত করার জন্যে এ এসব চর ড্রেজিং করা জরুরী। নদীতে  এখানে সেখানে  ড্রেজার মেশিন  বসিয়ে এলোপাথারি বালু  উত্তোলন বন্ধ করাও জরুরী।  নতুন জেগে উঠা বিশাল বালুচরগুলো শহররক্ষা বাঁধের ও ঠোটার পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় নদীর পুর্ব দিকে মেঘনার ঢেউয়ের আঘাত ও নদী গ্রাস করে চলছে। গ্রোয়েন স্থাপনের উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।

অবশ্য পুরানবাজার ও পযর্টন কেন্দ্রের মোলহেড গ্রোয়েন হিসেবে কাজ করছে। এতে পানির প্রবাহ শহরের নতুনবাজার ও  পুরানবাজারের পশ্চিমে অবস্থিত ২টি ঠোটায়  বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দুবর্ল হয়ে ভিন্ন পথে প্রবাহিত হয়ে যায় । তিনি আরও জানান এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। যা গত ৪/৩/২০২১ খ্রি. সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিশেষজ্ঞ টিম কর্তৃক যাচাই-বাছাই করা হয়। পরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একনেকে পাঠাবে। সেখানে এটা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদন হলেই স্থায়ী বাঁধের কাযর্ক্রম শুরু হবে বলে আশা করা যায় । তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, কবে নাগাদ শেষ হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

প্রমত্তা মেঘনার ভাঙন দেখতে ১৯৭৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিজান চৌধুরী (এমপি) বিশেষজ্ঞ টিমসহ চাঁদপুর আসেন। তখন বঙ্গবন্ধু যে কোন মূল্যে চাঁদপুরকে মেঘনার ভাঙন থেকে রক্ষা করার আশ্বাস দেন। চাঁদপুর শহর রক্ষায় তখন সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ হলেও পরবর্তী সময়ে বাঁধ রক্ষায় অস্থায়ী কাজ হয়েছে বিএনপি ও এরশাদের আমলে। বাঁধ রক্ষায় ও বাঁধ মেরামত নিয়ে হয়েছে অতীতে অনেক দুর্নীতির মুখরোচক খবরও রয়েছে । কিন্তু স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে বতর্মান সরকার ও  শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি ছাড়া অতীতে কোন সরকারই বা নেতা কোন কার্যকরী  বা বাস্তবসম্মত  পদক্ষেপ না নেওয়ায় নদীপাড় সংলগ্ন বসবাসরত মানুষজন  ও ব্যবসায়ীরা রয়েছেন ফিবছর হতাশায়।  এরপরও তাদের সকলের একটাই প্রশ্ন– “কবে হবে  শহর রক্ষার স্থায়ী বাঁধ? আমরা দেখে যেতে পারবো তো? ”

বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রবীণ মুক্তিযোদ্বা মুজিবুর রহমান, চাঁদপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি ও প্রবীণ ব্যবসায়ী নেতা জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম স্থায়ীভাবে শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় এমপি ডা. দীপু মনি ও সরকারের প্রতি  আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, পুরানবাজারসহ আশপাশের এলাকা ৩ শতাধিক বছরের পুরনো জনপদ। হারানো ব্যবসা-বাণিজ্যের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে  যেভাবেই হোক পুরানবাজার ও আশপাশের এলাকাকে স্থায়ী বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা অতীব জরুরী ও এখন সময়ের দাবি।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)