গোলাম হালদার মোল্লা :
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে অমর সরকার (৩৭) নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে নিজ বাড়ির উঠানে গলা ও হাতের কব্জি কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত অমর সরকার জেলার মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠেটালিয়া গ্রামের রবি ভক্তের ছোট ছেলে। তিনি প্রায় ৭ বছর ধরে মতলব দক্ষিণ উপজেলার সারপাড় গ্রামের দাস বাড়িতে (নিজ বাড়ি) পিতা-মাতা ও বড় ভাই-ভাবিসহ বসবাস করতেন। অমর সরকার নারায়ণপুর বাজারে স্বর্ণের ব্যবসা করতেন।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দোকানের কর্মচারী অনিককে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, অমর সরকার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর বাজারে প্রায় ২০ বছর যাবৎ স্বর্ণের ব্যবসা করে আসছেন। ঘটনার দিন রাত ৯ টার দিকে দোকান বন্ধ করে দোকানের কর্মচারী অনিককে সাথে নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে মতলব বাজারে যায়। সেখান থেকে মতলব পৌরসভার কলাদী এলাকায় তার বোনের বাড়িতে যান। বোনের বাড়ি থেকে রাত ১১ টার সময় কর্মচারীকে সাথে নিয়ে নারায়ণপুরে চলে আসেন। এরপর আর বাড়ি ফিরেননি অমর।
পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে কর্মচারী অনিক ঘরের দরজায় নক করে পরিবারের লোকজনকে জানান অমর সরকারকে খুন করা হয়েছে। পরে খবর পেয়ে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর একে একে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টিগেশন (পিবিআই) ও সিআইডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অমর সরকারের পিতা রবি ভক্ত জানান, প্রতিদিনের মতো আমি আমার ছেলের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে থাকি। সে রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যেই বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু ঘটনার দিন রাত গভীর হলেও ছেলে বাড়িতে আসেনি। পরে খবর পাই বাড়ির উঠানে অমরকে হত্যা করা হয়েছে।
অমর সরকারের স্ত্রী প্রিয়াংকা সরকার জানান, ঘটনার ৪-৫ দিন আগে আমি আমার বাবার বাড়িতে যাই। ঘটনার আগের দিন অমরের সাথে আমার ফোনে কথা হয়েছে। ঘটনার দিন আমি মোবাইলে কল দিয়েছিলাম। কিন্তু কল ধরে নাই।
নিহত অমর সরকারের আড়াই বছরের এবং দেড় বছরের দুটি মেয়ে ও ছেলে রয়েছে।
এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া জানান, আমরা ভোরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। খুনিরা নিহত ব্যক্তিকে ধারালো ছুড়ি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও পিবিআই’র পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে।