চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দিবে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন প্রদান বা সমর্থন জানিয়ে কোনো প্রার্থী দিবে না বিএনপি। জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচন পুরোপুরি বয়কট করবে বিএনপি। স্বতন্ত্র হিসেবে দলের কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলেও আভাস পাওয়া গেছে। বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আমরা চেয়ারম্যান কিংবা সদস্য পদে কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থন জানাবো না। আমরা এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবো না। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের আলোকে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে এখনো প্রচার-প্রচারণা বা আগ্রহ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হলে এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র কোন্দল সৃষ্টি হলে বিএনপির কোনো কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। অন্যদিকে সদস্য পদে বিএনপির কিছু নেতা প্রার্থী হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম চাঁদপুর সদর উপজেলার সদস্য পদে মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মানিক।

চাঁদপুরসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচনের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। গত ২৩ আগস্ট এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন পত্র বাছাই ১৮ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ২৬ সেপ্টেম্বর ও ভোটগ্রহণ ১৭ অক্টোবর।

২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে।

এরপর প্রথমবারের মতো নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সে সময় ৬১টি জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচন হয়েছিল। এরমধ্যে ১৯ জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। জেলা পরিষদের মেয়াদ আরও আগেই শেষ হলেও আইন সংশোধনসহ অন্যান্য জটিলতার কারণে ভোটগ্রহণ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।

স্থানীয় এই সরকারের আইনটি সংশোধনের পর গত ১৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রশাসক বসানো কথা বলা হয়। এতে বলা হয়- দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় নির্বাচিত পরিষদগুলো বিলুপ্ত করা হলো।

এ অবস্থায় জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের আগে প্রত্যেক জেলা পরিষদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি যোগ করে জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী গত ৬ এপ্রিল সংসদে পাস হয়। এরপর সংশোধনীর গেজেট প্রকাশ হয় ১৩ এপ্রিল।

শেয়ার করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)