হাইমচরে গৃহবধূর সাথে প্রতারণা : স্বর্ণালংকারসহ অভিযুক্ত আটক

বিশেষ প্রতিনিধি :
চাঁদপুর সদরস্থ বিষ্ণুপুর গ্রামে সুলতান মিজির ছেলে মুনসুর আলী সবুজ (২৮) ছদ্মনাম ব্যবহার করে সেনাবাহিনী অফিসার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন হাইমচরের দক্ষিণ আলগী গ্রামের মোস্তফা কামালের মেয়ে আছমা আক্তার মুন্নির সাথে প্রতারণার করে নগদ ১ লক্ষ টাকাসহ ৬ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা আত্মসাৎ করে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী আছমা আক্তার মুন্নির বড় বোন হাসনা আক্তার তিন্নি বাদী হয়ে চাঁদপুর পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাইমচর থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়া তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্ত মুনসুর আলী সবুজের অবস্থান নির্ণয় করে চাঁদপুর সদর উপজেলার ষোলঘর এলাকা থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হন।

জানা যায়, মনসুর আলী সবুজ ‘কামরুল’ নাম ধারণ করে সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে ভিকটিম মুন্নির সাথে পরিচিত হয়। পরবর্তীতে তার পিতার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সে বিভিন্নভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করে তাদের মনে জায়গা করে নেয়। অতঃপর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া থেকে শুরু করে ঢাকা ও চাঁদপুর হাসপাতালে রোগীর সাথে অবস্থান করা এবং আরো অনেক বিষয় সহযোগিতা করলে তারা তাকে খুব বেশি বিশ্বাস করে ফেলে। এক পর্যায়ে মুন্নির কাছ থেকে ওই প্রতারক এক লক্ষ টাকা ধার নেয়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সে তার বিয়ের জন্য তিন্নির গয়নার অনুরূপ গয়না বানাবে বলে তিন্নির গয়নাগুলো (একটি স্বর্ণের নেকলেস, একটি স্বর্ণের চেইন ও একজোড়া স্বর্ণের বালা ওজন অনুমান ১০ ভরি) নিয়ে যায়। এরপর হতে তাকে আর ফোনে পাওয়া যায় না।

হাসানা আক্তার তিন্নির অভিযোগের ভিত্তিতে হাইমচর থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়া তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দীর্ঘ ৫ দিন অভিযান পরিচালনা করে আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে চাঁদপুর সদর থানাধীন ষোলঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে একটি স্বর্ণের চেইন, একজোড়া স্বর্ণের চুরি (ওজন ৫ ভরি) উদ্ধার করে আসামীকে আদালতে সোপর্দ করেন।

প্রতারক মুনসুর আলী সবুজ জানায়, প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে আছমা আক্তার মুন্নির সাথে ও তার আত্মীয়স্বজনদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করি। অতঃপর বিশেষ কৌশলে উক্ত স্বর্ণালংকার ও টাকা আত্মসাৎ করি।

হাইমচর থানার ওসি (তদন্ত) সুজন বড়ুয়া জানান, আসামি মুনসুর আলী সবুজ একজন প্রতারক। প্রাথমিক তদন্তে তার মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। আসামীর বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন মনে করছেন হাইমচর থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়া।

আসামী জামিনে মুক্তি পেলে পলাতক হয়ে মামলার তদন্তে ব্যঘাত ঘটাতে পারে। আসামীর কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত আরো একটি স্বর্ণের নেকলেস ও ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে আসামীকে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)